25.6 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

কখন আঘাত হানবে ‘মোখা’

আরও পড়ুন

::: নাদিরা শিমু :::

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ রোববার (১৪ মে) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার আগে যেকোনো সময় উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।শনিবার (১৩ মে) বিকেলে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।

শনিবার (১৩ মে) দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে ভোর ৪ টার মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার যাত্রাপথ বাংলাদেশের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।

তার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে।

পূর্বাভাসে তিনি বলেন, ‘১৪ মে (রোববার) সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি সেন্টমার্টিন দ্বীপ এবং পুরো কক্সবাজার জেলার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।’

এই সময় বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮৫-২০০ কিমি হতে পারে বলে জানান তিনি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মোখার ব্যাস ৪৫০ কিলোমিটার, প্রথমে আঘাত হানবে মিয়ানমারে। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির ব্যাস সাড়ে চারশ কিলোমিটার। অর্থাৎ এর কেন্দ্রের চারপাশে দুইশ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হবে।মিয়ানমারের অংশে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বেশি হবে। দেশটির রাখাইন রাজ্যেই ক্ষতি হবে বেশি।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ডান পাশে টর্নেডো হয় এবং জলোচ্ছ্বাস অধিক উচ্চতার হয়ে থাকে।

কক্সবাজার উপকূলেও প্রভাব থাকবে। তবে সেন্টমার্টিন বেশি ঝুঁকিতে আছে। বড় জোয়ারের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাস মিলিত হলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ কিছু সময়ের জন্য পানির নিচে চলে যেতে পারে। তবে সেটা স্থায়ী নয়। সেন্টমার্টিনে আঘাত হানার আগে মিয়ানমারের স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী ড. আনন্দ কুমার দাশ জানিয়েছেন, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াকপিউ বন্দরের মাঝ দিয়ে স্থলভাগে ওঠে আসবে মোখা। এক্ষেত্রে এটি সিত্তে বন্দর এলাকা দিয়ে আঘাত হানবে। ফলে ওই বন্দর ও আশ-পাশের এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ সতর্কতা বিষয়ক সংস্থা গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো–অর্ডিনেশন সিস্টেম (জিডিএসিএস) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে মিয়ানমারের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এদের মধ্যে দুই লাখ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া বাংলাদেশের ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী হুমকির মুখে আছে। তিন মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে মোখার প্রভাবে।

ঝড়টি শনিবার (১৩ মে) সকালে গতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। সে সময় গতিবেগ ওঠেছিল ২২০ কিলোমিটার। সেটি এখন কমতে শুরু করেছে। রাতের মধ্যে এটি ২শ কিলোমিটারের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছে উত্তর ভারত সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ সংস্থা আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহাওয়া বিষয়ক কেন্দ্র (আরএসএমসি)।

সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, রোববার (১৪ মে) দুপুরে উপকূলে আছড়ে পড়বে। সে সময় এর গতিবেগ থাকবে ১৭৫ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়ে স্থলভাগে ওঠে আসবে ঝড়টি। এক্ষেত্রে সোমবার (১৫ মে) শক্তিক্ষয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

এইবাংলা /হিমেল

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর