::: কতুবউদ্দিন হিরু :::
ঝড়, বন্যা, ঘূর্নিঝড়ের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকা বাংলায় আবারও দূর্যোগের কালো মেঘ। ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন ‘মোখা ‘ যা সিডর এর চাইতেও শক্তিশালী হতে পারে বলছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ বিজ্ঞপ্তি দেয় আবহাওয়া অফিস। সেখানে সকাল ছয়টার সময়ের মোখার গতিপ্রকৃতি তুলে ধরা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, সমুদ্রের উপর দীর্ঘ সময় ধরে ঘুরতে থাকা ঘূর্ণিঝড় উপকূল দিকে ধেয়ে আসা মানে লক্ষণ মোটেই ভাল নয়। যত বেশি সময় সমুদ্রে ঘুরতে থাকবে, ততোই সে শক্তি অর্জন করতে থাকবে।দেশ বিদেশ থেকে প্রাপ্ত “মোখা” বা “মোচা”র গতিপথ ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াবহ সেই সাইক্লোনের সাথে মিলে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গভীর সমুদ্র থেকে সে পশ্চিম, পশ্চিম-উত্তর কোণে উড়িষ্যা উপকূলের দিকে সরে গিয়ে আবার গতিপথ বদলে বাংলাদেশে ভোলা ও টেকনাফ উপকূল বরাবর যাবার পূর্বাভাষ দেয়া হচ্ছে। এটাই চরম বিপদের লক্ষণ। এক, গতিপথ পরিবর্তন করার কারণে সময় পাচ্ছে অনেক। দুই, ঝড়ের কেন্দ্র তাহলে অতিক্রম করবে চট্টগ্রাম বা শহরের উপর দিয়ে। আর দুই বাহু আঘাত করবে ভোলা এবং কক্সবাজারকে।যেমনটি হয়েছিল ২৯ এপ্রিল, ১৯৯১ সালে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামি রবি-সোমবার বুঝা যাবে, তা গতিপথ বদলে উত্তর-পূর্ব কোণে সরে আসছে কিনা। সেরকম হলে সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার এবং সমুদ্র উপকূল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতেই হবে সবাইকে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ–পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ–পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
কফির নামে এই সুপার সাইক্লোনের নামকরন করা হলেও এর ক্ষতির মাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে। ইয়েমেন সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ‘মোখা’।বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিভিন্ন দেশ। যেমন এর আগে উপকূলে আঘাত হানা ‘সিত্রাং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। তেমনই ‘মোখা’ নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। যদিও ‘মোখা’ শব্দের আক্ষরিক কোনো অর্থ নেই। ইয়েমেনের বন্দর শহর ‘মোখা’র নামে ঘূর্ণিঝড়ের এ নামকরণ করা হয়েছে।
১৯ শতক পর্যন্ত মোখা ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। এ শহর থেকেই সারা বিশ্বে বিখ্যাত কফি ‘মোখা’ রফতানি করা হতো। কফির নামকরণও হয়েছে শহরের নামেই। বহু বছর ধরে মোখা বন্দর দিয়ে দেশ-বিদেশে ‘মোখা’ কফি রফতানি করা হতো।
এইবাংলা/ হিমেল