নীলফামারী প্রতিনিধি :
নীলফামারী সদরের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বসুনিয়া হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব–এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার ও সরকারকে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) জানিয়েছে, প্রায় দুই বছর ধরে কোনো বিল পরিশোধ ছাড়াই হাসপাতালটি মিটার বাইপাস করে সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় নেসকোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিশেষ নজরদারি দল হাসপাতালটিতে হঠাৎ অভিযান চালিয়ে মিটার বাইপাসসহ অবৈধ সংযোগের সুস্পষ্ট আলামত পায়। পরে অবিলম্বে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং হাসপাতালের প্রিপেইড মিটার জব্দ করা হয়।
নেসকো নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিমুল ইসলাম সেলিম বলেন, “২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালটি কোনো বিল পরিশোধ করছে না। তারা মিটার বাইপাস করে সরাসরি লাইন ব্যবহার করেছে, যা সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ চুরি। প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মিটার জব্দ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ আইন অনুযায়ী, জরিমানা, বকেয়া বিল আদায় এবং মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিল প্রদান না করেই সংযোগ ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেছে। হাসপাতালের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বসুনিয়া বলেন, “মিটার পুড়ে যাওয়ায় আমরা সাময়িকভাবে বিকল্প লাইনে সংযোগ নিয়েছি। এটি নিয়ম বহির্ভূত হলেও ইচ্ছাকৃতভাবে চুরি করা হয়নি।” তবে নেসকো কর্মকর্তারা বলেন, মিটার নষ্ট হলে লিখিত আবেদন ও অনুমোদনের মাধ্যমে অস্থায়ী সংযোগের বৈধ প্রক্রিয়া রয়েছে, যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালন করেনি।
স্থানীয়রা এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “মানুষের চিকিৎসা দিয়ে ব্যবসা করবে—এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সরকারি বিদ্যুৎ চুরি করা লজ্জার বিষয়। লাখ লাখ টাকা আয় করেও সরকারকে একটি টাকাও না দেওয়া হলো।”
নেসকো সূত্র জানায়, দুই বছরের ব্যবধানে বিদ্যুৎ চুরির কারণে সরকার লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে ভবিষ্যতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এমন অনিয়মে সাহস পাবে না।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
