চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানাধীন মদুনাঘাট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু, বিপিএম-বার এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ সকালে ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম নিজস্ব প্রাইভেটকারে করে হামিম এগ্রো ফার্মে যান। বিকেলে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে আসা অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাকিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা ও হাটহাজারী থানা পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে এবং প্রাথমিক তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার অভিযান পরিচালনা করে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে রাউজান থানার বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহ পাড়া এলাকা থেকে মোঃ আব্দুল্লাহ খোকন (প্রকাশ ল্যাংড়া খোকন)-কে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং পরবর্তীতে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
খোকনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে রাউজান থানাধীন নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে মোঃ মারুফ নামে আরেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মারুফ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়, যা মোঃ সাকলাইন হোসেন-এর হেফাজতে ছিল বলে জানায়।
পরবর্তীতে ৪ নভেম্বর ২০২৫ রাতে হাটহাজারী থানার একটি বিশেষ টিম রাউজান থানাধীন নোয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ সাকলাইন হোসেন-কে গ্রেফতার করে। তাঁর হেফাজত থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, রাউজান থানাধীন বালুমহল নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জিয়াউর রহমানসহ মোট চারজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আরও ১০-১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডসহ জেলার অন্যান্য গুরুতর অপরাধে জড়িতদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু, বিপিএম-বার-এর নির্দেশনায় নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন, বিশেষ টহল, রাত্রীকালীন অভিযান ও তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তিনি জানান, “চট্টগ্রাম জেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের সম্মিলিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এই বাংলা/এমএস
টপিক
