নোয়াখালী প্রতিনিধি :
লিবিয়ায় এক বাংলাদেশি প্রবাসীকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মানব পাচারচক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালী।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
গ্রেপ্তার ব্যক্তি খন্দকার রিফাত হোসেন (২৬), টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানার কামুটিয়া গ্রামের খন্দকার রমজান আলীর ছেলে।
নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করে নোয়াখালী পিবিআই।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের মার্চ মাসে অবৈধভাবে লিবিয়ায় যান রিফাত হোসেন। সেখানে একটি কফিশপে চাকরি করার সময় তাঁর পরিচয় হয় স্থানীয় মাফিয়া আবদুল্লা, মোহাম্মদ (দু’জনই লিবিয়ান) এবং পাকিস্তানি নাগরিক তানভীরের সঙ্গে। পরবর্তীতে তাঁদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
অন্যদিকে, ভিকটিম মো. লিটন হোসেন ওরফে সুজন (২৫) লিবিয়ার একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা করে তিনি টাকা সঞ্চয় করতে থাকেন। বিষয়টি জানতে পেরে রিফাত ও তাঁর সহযোগীরা ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি এক সুপার মার্কেটের সামনে থেকে লিটনকে জোরপূর্বক অপহরণ করে রিফাতের বাসায় নিয়ে যায়।
অপহরণের পর লিটনকে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরবর্তীতে তাঁর কাছ থেকে ৭২ হাজার দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা) আদায় করা হয়। এছাড়া রিফাত আনু আক্তার নামীয় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, নারিন্দা শাখার মাধ্যমে আরও ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে।
ভিকটিমকে প্রায় দুই মাস ২০ দিন আটকে রেখে আরো অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলে। এ ঘটনায় লিটনের মামা বাদী হয়ে রিফাতের শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে, চাপে পড়ে অপহরণকারীরা ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল ভিকটিমকে মুক্তি দেয়।
নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, “দীর্ঘ তদন্তের পর মানব পাচারচক্রের অন্যতম সদস্য রিফাতকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, রিফাত লিবিয়ায় বিভিন্ন দেশের মাফিয়া চক্রের সঙ্গে যুক্ত থেকে ইতালি গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের অপহরণ করে বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত।”
তিনি আরও জানান, চক্রটির সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
