Become a member

Get the best offers and updates relating to Liberty Case News.

― Advertisement ―

spot_img

ভাঙ্গা–বরিশাল–কুয়াকাটা চার লেন সড়ক প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ শুরু

বরিশাল প্রতিনিধি : দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুদিনের প্রত্যাশিত ভাঙ্গা–বরিশাল–পটুয়াখালী–কুয়াকাটা চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে বড় অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যে বরিশাল অংশে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে...
Homeপ্রকৃতি ও পরিবেশশেরপুরের শতবর্ষী ঐতিহ্য ‘মমিনবাগ’: সময়ের সাক্ষী এক প্রাচীন স্থাপনা

শেরপুরের শতবর্ষী ঐতিহ্য ‘মমিনবাগ’: সময়ের সাক্ষী এক প্রাচীন স্থাপনা

বিশেষ প্রতিনিধি :

শেরপুর শহরের গৌরীপুর এলাকায় এখনো দাঁড়িয়ে আছে এক শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী—‘মমিনবাগ’। বছরের পর বছর কেটে গেলেও বাড়িটি যেন নিজের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের সৌন্দর্য ধরে রেখেছে অবিচলভাবে। এটি শুধু একটি পুরনো ভবন নয়, বরং শেরপুরের অতীত গৌরব, ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক জীবন্ত প্রতীক।

দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

ভূঁইয়া বংশের ঐতিহ্য

গৌরীপুর অঞ্চলে একসময় প্রভাবশালী ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের জমিদাররা বসবাস করতেন। তাঁদেরই এক জনের হাতে নির্মিত হয় ‘মমিনবাগ’। জমিদাররা ছিলেন শিক্ষানুরাগী ও সংস্কৃতিমনা; তাদের সৌন্দর্যবোধ ও রুচি ফুটে উঠেছিল এই স্থাপনার নকশা, বাগান ও অলংকরণে।

দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে ভূঁইয়া পরিবার ভারতে চলে যান এবং বাড়িটি তাঁদের বিশ্বস্ত প্রজার হাতে রেখে যান। দীর্ঘদিন প্রজারা যত্নে বাড়িটির ঐতিহ্য ধরে রাখেন।

নতুন যুগের সূচনা

১৯৭৭ সালে শেরপুরের বিশিষ্ট নাগরিক মো. উসমান গণী বৈধভাবে বাড়িটি ক্রয় করেন। তিনি বাড়ির মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে সংস্কার করেন এবং চারপাশে ফুল, ফল ও শোভাগাছ লাগিয়ে বাড়িটিকে করে তোলেন এক মনোরম আবাসস্থল। তাঁর হাতেই ‘মমিনবাগ’ ফিরে পায় নতুন প্রাণ ও নতুন রূপ।

‘মমিনবাগ’ নামের পেছনে গল্প

উসমান গণীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মমিন সাহেবের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বাড়িটির নামকরণ করা হয় ‘মমিনবাগ’। ধর্মপরায়ণ ও মানবপ্রেমী এই ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই নামটি স্থায়ী রূপ পায়। পরবর্তীতে এটি শেরপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতীকে পরিণত হয়।

স্থাপত্যশৈলী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

দুই তলা বিশিষ্ট এই প্রাসাদ নির্মিত হয়েছে ব্রিটিশ স্থাপত্যধারায়। উঁচু খিলান, প্রশস্ত বারান্দা, লোহার নকশা করা রেলিং এবং সুষম জানালার সারি মিলিয়ে এটি যেন এক ইউরোপীয় প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি। চারপাশে রয়েছে সবুজ গাছপালা ও ফুলে ঘেরা বাগান। পাশে একটি প্রাচীন দীঘি—যার জলে সূর্যের প্রতিফলনে অতীতের স্মৃতি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।

সংরক্ষণের দাবি

স্থানীয়রা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগে ‘মমিনবাগ’ সংরক্ষণ করা গেলে এটি শেরপুরের অন্যতম ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। এটি ইতিহাস ও স্থাপত্যপ্রেমীদের গবেষণার ক্ষেত্র হিসেবেও গুরুত্ব পেতে পারে।

ঐতিহ্যের প্রতীক

‘মমিনবাগ’ শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি শেরপুরের সামাজিক সম্প্রীতি, ঐতিহ্য এবং নান্দনিকতার প্রতীক। এখানকার প্রতিটি ইট ও দেয়াল যেন বলে—

“সময় চলে যায়, কিন্তু স্মৃতি থেকে যায়।” আর সেই স্মৃতিরই নাম— ‘মমিনবাগ’।

এই বাংলা/এমএস

টপিক