হরিরামপুর প্রতিনিধি :
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলে ভয়াবহ নদীভাঙনে শত শত পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার আজিমনগর, সুতালড়ি ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে গত তিন বছরে প্রায় ৯০০ পরিবারের বসতভিটা পদ্মার পেটে তলিয়ে গেছে।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
শুধু চলতি বছরেই লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরদিয়া, গঙ্গাধরদী, সেলিমপুর, জয়পুর ও পাটগ্রাম এলাকায় প্রায় ৩৫০টি বাড়িঘর ও শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত বছর হরিহরদিয়ার নটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গঙ্গাধরদীর পাঠানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে হারিয়ে গেছে।
বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে নটাখোলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, নটাখোলা আফরোজা উচ্চ বিদ্যালয় ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। গত তিন বছরে চরাঞ্চলের একমাত্র এমপিওভুক্ত আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ভবন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাতিঘাটা ও সোয়াখাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং সুতালড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
পাটগ্রাম গ্রামের গৃহবধূ রোজিনা আক্তার বলেন, “অনেক কষ্টে কাঠ আর টিন দিয়ে একটা ঘর দিছিলাম, এখন নদীতে পড়ে যাবে। আমাদের দিকে কেউ তাকায় না। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি।”

৫৫ বছর বয়সী ইমন হোসেন বলেন, “২৫ বিঘা জমি আছিল, সব নদীতে গেছে। এখন কিছুই নাই।”
জয়পুর গ্রামের রাবেয়া বেগম বলেন, “৬ লাখ টাকা খরচ করে ঘর তুলছিলাম, নদী ভাঙনে সব শেষ। ঘর তোলার টাকাও নাই, নিজেকে নিঃস্ব মনে হয়।”
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, “এ বছর ইউনিয়নের সাতটি মসজিদ এবং সেলিমপুর, হরিহরদিয়া ও গঙ্গাধরদী বাজার নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া আরও তিন শতাধিক বাড়ি ভেঙে গেছে।”
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, “সেলিমপুর, হরিহরদিয়া ও হরিনাঘাট এলাকায় প্রায় ২০০ হেক্টর ফসলি জমি পদ্মায় তলিয়ে গেছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “চরাঞ্চলের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই বাংলা/এমএস
টপিক
