ইবি প্রতিনিধি :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সম্প্রতি জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা নেওয়া ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ খবর জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায়।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
বরখাস্ত ও বহিষ্কৃতদের মধ্যে কিছু শিক্ষকের ক্ষেত্রে ছাত্ররা মানববন্ধন করেছেন। তবে বিএনপিপন্থী শিক্ষক সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) ইবি শাখা এবং জিয়া পরিষদ ফ্যাসিস্টদের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় চাইছে না। তারা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন, জুলাই বিপ্লববিরোধী কার্যকলাপে যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তির আওতায় না আসে।
জানা গেছে, গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগ, ভিডিও, তথ্যচিত্র ও সংবাদপত্রের প্রতিবেদন পরীক্ষা করে জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
উক্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী:
৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফ্যাসিস্টদের ব্যাপারে জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান বলেন, “যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বোর্ডে সেনসিটিভ স্থানে বসে আমাদের লোকদের প্রমোশন আটকে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের ছাত্র-শিক্ষক সংগঠন সব সময় এই বিষয়গুলো নজরে রাখে।”
ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, “জুলাই বিপ্লবে যারা বিরোধিতা করেছে, হুমকি-ধামকি দিয়েছে বা ক্ষয়ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে এতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তির আওতায় না আসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ উল্লেখ করেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরোধী বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা নির্ধারণ করবে কাকে কতটুকু শাস্তি দেওয়া যায়। ফ্যাসিস্টদের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় থাকবে না।”
এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্ক ও আন্দোলনের অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বহিষ্কৃত শিক্ষকদের পক্ষে মানববন্ধন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে, শাস্তি নেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
