কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্যেই দলীয় কিছু নেতার হুমকিমূলক বক্তব্যে এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ও নাশকতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির একাংশ তাদের পছন্দের প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের পক্ষে সরব হয়েছেন। অপরদিকে দলের অন্য একটি অংশ কেন্দ্রীয়ভাবে আলোচনায় থাকা এহসানুল হুদাকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। এই মতবিরোধ ঘিরেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২৯ অক্টোবর নিকলীর ছাতিরচর ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার পরশ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “যদি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালকে মনোনয়ন না দেওয়া হয়, তবে নৌপথ অবরোধ করা হবে।” এ ধরনের হুমকিমূলক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমালোচনার জন্ম দেয়।
এর আগে ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত আরেক সভায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম তালুকদার (হেলিম) বলেন, “ইকবাল ভাই ছাড়া অন্য কাউকে প্রার্থী করা হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।”
এছাড়া বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলেন, “ইকবাল ভাই ব্যতীত অন্য কাউকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।” সভায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আমিনুল হকও অনুরূপ বক্তব্য দেন, দাবি করেন, “ইকবাল সাহেবকে বাদ দিলে আমরা লাল কার্ড দেখাব।”
তবে একই আসনে বিএনপি ও জোটভুক্ত অন্যান্য দলের কিছু নেতা-কর্মী কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে এহসানুল হুদার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, নিকলী-বাজিতপুরে সবাইকে এহসানুল হুদাকে সহযোগিতা করতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের কাছে মাথা নত করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।”
এদিকে স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, এহসানুল হুদা একজন শিক্ষিত, সৎ ও জনবান্ধব ব্যক্তি। তার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়ছে। একইভাবে শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালও এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন বলে জানান কিছু বাসিন্দা।
তবে সাধারণ মানুষ আশঙ্কা করছেন, মনোনয়ন নিয়ে এই দ্বন্দ্ব যদি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে তা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। ইতিমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ের কিছু নেতার উসকানিমূলক বক্তব্য ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা এলাকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
