স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর কোনো নিয়মিত ফোর্স না থাকায় নৌ-কমান্ডোদেরই নৌ-বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনের পথ রচনা করতে হয়েছে।
সেই ঐতিহাসিক অবদানকে সম্মান জানিয়ে নৌ-কমান্ডোদের বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর পাইওনিয়ার ফোর্স হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশন।
আজ শনিবার বেলা ১০টায় ঢাকার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংগঠনটির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটি জানায়, ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্টের ‘অপারেশন জেকপট’-এর মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ২৬টি জাহাজ ধ্বংস করে পাকিস্তানি বাহিনীর নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। বিজয় অর্জন পর্যন্ত প্রায় ১২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া হয় নৌ-কমান্ডোদের দুঃসাহসিক অভিযানে। এই অপারেশনকে কেন্দ্র করে ‘অপারেশন জেকপট ডে’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে দিবসটি উদযাপনের দাবি জানানো হয়।
তারা আরো বলেন, নৌ-কমান্ডোদের জন্য ঢাকায় একটি স্থায়ী অফিস নির্মাণে সরকারি জমি বরাদ্দ দিতে হবে, যাতে চিকিৎসা ও অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় আগত সদস্যরা সেবা নিতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরটি গোপনীয় থাকায় এবং সিনিয়র কর্মকর্তার অভাবে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। খেতাব প্রাপ্তিতেও তারা উপেক্ষিত। আজও তারা প্রচারবিমুখ ও অবহেলিত অবস্থায় রয়েছেন। অনেকেই চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অপারেশন জেকপটসহ নৌ-কমান্ডোদের দুঃসাহসিক অভিযান মুক্তিযুদ্ধের সামরিক ও কৌশলগত সফলতার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাদের অবদান যুদ্ধের গতিপথ বদলে দিয়েছে এবং স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নৌ-কমান্ডোদের সাহসিকতা জাতিসত্তার উজ্জ্বল প্রতীক। একজন যোদ্ধা আমরণ যোদ্ধা- এই বিশ্বাসই আমাদের পথনির্দেশক। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে আদর্শে আমরা যুদ্ধ করেছি, তা বাস্তবায়নে আমাদের দায়িত্ব আজও অব্যাহত।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এই বাংলা/এমএস