25.6 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

আট কোটি টাকার সম্পদ গোপন, ব্যবসায়ী আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আরও পড়ুন

নাদিরা শিমু, চট্টগ্রাম :::

সাত কোটি ৯৪ লাখ সাত চল্লিশ  হাজার ১২ টাকা মুল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদ বিবরণীতে অসত্য তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এ ইউ এম আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বৃহস্পতিবার দুপুরে (৪ঠা জানুয়ারি)  দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত  কার্যালয় চট্টগ্রাম -১ এর সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহারে আসামী এ ইউ এম আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা গেছে, তিনি মেসার্স আকর্স ট্রেডিং লিমিটেড, ইউনিশীপ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেসার্স মাউ সল্ট ক্রাশিং লিমিটেডের মালিক। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন জমি মালিকের কাছ থেকে ভূমি  চিহ্নিতকরণ, দখল পুনরুদ্ধার করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়েছেন তিনি। এসব ভূমি নিজের উপার্জিত অর্থের মাধ্যমে ক্রয় করার মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন আসামি আবুল হোসাইন। ভূমি  অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকার থেকে প্রাপ্ত অর্থও তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে দেখার নি। 

অনুসন্ধানকালে আবুল হোসাইনের নামে  ১১ কোটি ৫৯ লাখ ১২ হাজার ২৫০ টাকা মুল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা । 

দুদক সূত্রে জানা যায,  ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে  তিনি ২১ কোটি ১৯ লাখ ৭২ হাজার ২০২ মুল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন। সম্পদ বিবরণীতে দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার স্থাবর সম্পদের পরিমান  ২০ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ২০২ টাকা,  অস্থাবর সম্পদের পরিমান  ৫৪ লাখ টাকা। 

মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, চব্বিশ হাজার স্কয়ার ফুট আয়তনের অত্যাধুনিক পাঁচ তলা দালানে  আসামি স্বপরিবারে বসবাস করেন, যার প্রতিটি কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।  চট্টগ্রাম শহরের মধ্যম হালিশহরে পৈতৃক ভিটায় পাঁচ তলা দালান নির্মাণ করেছেন তিনি। এই বাড়ি থাকার বিষয়টি সম্পদ বিবরণীতে আড়াল করেছেন। এছাড়া এই বাড়ির নির্মাণ ব্যয় সম্পদ বিবরণী ও আয়কর নথিতে আড়াল করেছেন তিনি। তিনি তার কোন দায়দেনার তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন নি। 

দুদকের অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত নথি ও আয়কর বিবরণীতে দেখা যায় ২০০৪-০৫  করবর্ষে ব্যয়সহ ১২ কোটি ৬৭ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ টাকার সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৮৯-৯০ করবর্ষে তিনি তার তিন থেকে উপহার বাবত ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৬ টাকা এবং উত্তরাধিকার সুত্রে ৬০ হাজার টাকা মুল্যের  সম্পদ পেয়েছেন। ২০০০-২০০১ করবর্ষে স্ত্রী থেকে উপহার বাবত সতের লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা (১৭,৫০০০০), ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৯১ লাখ ২ হাজার ৭৬৩ টাকা,  কৃষি আয়বাবত ৫ লাখ ৬০ হাজার ৪৩০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৩ কোটি ৫২ লাখ ৮২ হাজার ৭১১, সুদ বাবত ৬ হাজার আট টাকা – মোট ৪ কোটি ৭৩ লাখ পাঁচ হাজার ৬৮৮ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। 

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, আবুল হোসাইনের প্রকৃত সম্পদের পরিমান প্রাপ্ত নথি ও সম্পদ বিবরণীর সাথে সংগতিপূর্ণ নয় । তিনি ৭ কোটি ৯৪ লাখ সাত চল্লিশ  হাজার ১২ টাকা মুল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগ দখলে রেখে অপরাধ করেছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে। 

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর