চাঁদপুরে শেষ হচ্ছে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা, নদীতে নামার প্রস্তুতিতে জেলেরামা ইলিশের প্রজনন সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে আবারও শুরু হচ্ছে মাছ ধরা।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে (মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত) চলা এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে শনিবার রাত ১২টায়। তাই জেলেরা ইতোমধ্যে জাল-নৌকা মেরামত করে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলায় ৪৪ হাজার ৩৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন, যারা নিষেধাজ্ঞা শেষে রাতেই নদীতে নামবেন বলে জানা গেছে।
চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্সের তথ্য অনুযায়ী, ৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। এ সময়ে ৩৯৯টি অভিযান, ৫৪টি মোবাইল কোর্ট, ৬৩টি মামলা এবং ৮৭ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ লাখ ৩৪২ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে এবং ১,০০৫ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ উদ্ধার করে গরিব, দুস্থ ও এতিমদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নতুন করে মাছ ধরার আশায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
রঘুনাথপুর, আনন্দবাজার ও রনাগোয়াল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা নৌকা ও জাল মেরামতের কাজ করছেন। স্থানীয় জেলে শাহজান মাঝি ও আনোয়ার মাল জানান, “সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা আমরা মানি, কিন্তু অন্য জেলার কিছু অসাধু জেলে রাতে নদীতে নেমে মাছ ধরে নিয়ে যায়। ফলে নিষেধাজ্ঞা শেষে আমরা তেমন মাছ পাই না। তাছাড়া, বাজারে জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে, ফলে পরিবার চালানোও কঠিন হয়ে পড়ছে।”
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র বলেন, “ইলিশ মূলত সামুদ্রিক মাছ, তবে ডিম ছাড়ার সময় মিঠাপানিতে চলে আসে। মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা জেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও টাস্কফোর্সের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। অভিযান চলাকালীন জেলেদের প্রত্যেককে ৪০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছর ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং সাধারণ মানুষ তুলনামূলকভাবে সহজে ইলিশ ক্রয় করতে পারবে।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
