25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

পদপদবী ছাড়াই আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতা ‘সাজ্জাদ’

আরও পড়ুন

নাদিরা শিমু ||

শখের বসে কিংবা শুধু নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতিতে আসেননি সাজ্জাদুল হাসান। পাহাড়তলি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আফসার মিয়ার সন্তান সাজ্জাদ।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ নামক শিশু রাষ্ট্রটিকে হায়েনারা যখন লুটপাটের ক্ষেত্র মনে করে ধ্বংসের উৎসবে মেতে উঠেছিল তখনই জ্বলে উঠেছিলেন চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ  নুরুল আফসার মিয়া। লাখ, লাখ শহীদের আত্মদানে অর্জিত বাঙ্গালীর স্বাধিকার নিয়ে যখন কানামাছি খেলা চলছিল ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের  কঠিনতম দু:সময়ে এদেশের কিছু সাহসী তরুন স্বৈরাচারের বন্দুকের সামনে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছিলেন, তাদের অন্যতম নুরুল আফসার৷ তার সন্তান হিসেবে সাজ্জাদুল হাসান স্কুল জীবন থেকেই ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী।

বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো বাংলাদেশেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জনগণের সম্পৃক্ততার কারণে বিভিন্ন মতাদর্শের রাজনীতির চর্চা হয়ে আসছে। প্রকৃতপক্ষে আদর্শের  রাজনীতি নিজেই বিভিন্ন মূল্যবোধ, আদর্শ বা নীতির মতাদর্শ নিয়ে বিকশিত হয়। সমসাময়িকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পঁচাত্তর-উত্তর কঠিন সময়ে খুনি হয়েনারা যখন ক্যু পাল্টা ক্যু নিয়ে রাষ্ট দখলের খেলায় মগ্ন, আদর্শহীন সুবিধাভোগীরা ও তখন দিশেহারা ছিল। কিন্তু মননে যারা বঙ্গবন্ধু, একাত্তর আর স্বাধীনতাকে ধারণ করেছিল তারা দিশেহারা হয়নি। পঁচাত্তর-উত্তর সেই সংকটাপন্ন  সময়ে চট্টগ্রামের  রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন- সাহসী চট্টলবীর এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও তার হাতে গড়া মুজিব আদর্শের সৈনিক  নুরুল আফসার চৌধুরী।এমন একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে সাজ্জাদুল হাসান  রাজনীতিতে যুক্ত হবার প্রাক্কালে শপথ করেছিলেন পিতাহারা এই এতিম রাষ্ট্রটিকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে জীবনবাজি রেখে আমৃত্যু কাজ করে যাবেন।

১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সালের মে পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সন্ত্রাসীদের হাতে ১৭৪ জন প্রাণ হারান। ১৯৯২ সালে পিতা আফসার মিয়াকে লক্ষ্য করে বিএনপির সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া বোমার ক্ষয়ক্ষতি থেকে খানিকটার জন্য বেঁচে যান সাজ্জাদুল হাসান। ১৯৯২ সালে বসতঘরে সেই বোমা হামলার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সাজ্জাদকে  যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়ে দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগ থেকে বিবিএ (১৯৯৬-২০০০) সম্পন্ন করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রেও জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ২০০১ সালে ফ্লোরিডা যুবলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠা সাজ্জাদ যুক্তরাষ্ট্র  যুবলীগকে সুসংগঠিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন । নিউইয়র্ক যুবলীগের সদস্য হিসেবে প্রবাসীদের কাছে পোঁছে দিয়েছেন মুজিব আদর্শের বার্তা। একসময় নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের সদস্য হন।

এক এগারোর সংকটময় মুহুর্তে দলের সভানেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালীন সময়ে সেনা সমর্থিত সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পাশে ছিলেন সবসময়। শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে  রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। এরআগে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র এলে ফ্লোরিডায় বিপুল সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাজ্জাদ বলেন,  ১৯৮৯ সালে  ঐতিহাসিক অলংকার চত্বরের জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।চট্টগ্রাম সহ সারা দেশ স্বৈরাচার  বিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মূল হাতিয়ার জয় বাংলার স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত চট্টগ্রামের রাজপথ। ঠিক সেই সময় চট্টগ্রামের রাজনীতি ও রাজপথকে চাঙা  করতে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অলংকারের সেই সভায় সরকার বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। আর সেই একই মঞ্চে সভাপতিত্ব করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার বাবা পাহাড়তলী থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি  নুরুল আবছার মিয়ার।পিছনের সারিতে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার সাথে বসা আমার বাবা। আওয়ামী লীগের রাজনীতি আমার মজ্জাগত। একারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেও ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ করেই কেটেছে জীবনের সুবর্ণ সময়। ‘

সাজ্জাদ হাসান বলেন, ‘ ছোট বেলা থেকে জেনে এসেছি বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রজ্ঞাবান,নির্লোভ, নিরহংকারী, পরোপকারী নির্ভীক ব্যক্তিত্ব। তার আদর্শে দীক্ষিত হয়ে ব্যক্তিগত কোন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির জন্য কোন কাজ কিংবা গবেষণা করি নি। বঙ্গবন্ধুকে মনেপ্রাণে ভালোবাসি এবং ব্যক্তি জীবনে তাঁর আদর্শ ও পদাঙ্ক অনুসরণ করার চেষ্টা করি। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ঋণ শোধবার নয়। তাই পদ পদবি নয়, তাঁর আদর্শকে ধারণ করে জনসেবা করলেই কেবল কিঞ্চিত ঋণ শোধ হতে পারে। ‘

 

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর