25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

রাস্তায় ওঁত পেতে বিএনপি নেতা এনামের উপর হামলার চেষ্টা, আহত হয়ে চমেকে যুবদল নেতা

আরও পড়ুন

আনোয়ারা প্রতিনিধি :::

যুবদল নেতা মন্জুর জানাজা শেষে ফেরার পথে আনোয়ারায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক  এনামুল হক এনামের উপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে ছাত্রদলের পদ বঞ্চিতরা। রবিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটেছে। ভাগ্যক্রমে  এনামুল হক ফেরার রাস্তা পরিবর্তন করার কারণে বাঁচলেও দলের কর্মী সমর্থকদের হামলায়  আহত হয়েছেন দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলম।

দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা ওহিদুল আলমের ( পেশায় আইনজীবী)  নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আহত যুবদল নেতার। ব্যাপক মারধরের শিকার যুবদল নেতা আলমকে আহত অবস্থায়  আনোয়ারা হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।

আলম জানান,  এনামের জন্য লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায়  ওুঁত পেতে থাকেন সংক্ষুব্ধ কর্মীরা। কিন্তু একই রাস্তা দিয়ে মোটর সাইকেল নিয়ে ফেরার পথে হামলার শিকার হন আলম। জানা গেছে দক্ষিণ জেলা যুবদলের রাজনীতিতে আলম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র  যুগ্ম আহবায়ক  এনামের অনুসারী হিসেবেই পরিচিত তিনি।

গেল শুক্রবার (১১ আগস্ট) ছাত্রদলের কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ৪২ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে রবিউল হোসেন রবিকে আহ্বায়ক, মোহাম্মদ ফিরোজকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কামরু উদ্দিন সবুজকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত এই আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ দেখা দেয় বিএনপির সাবেক সাংসদ সরওয়ার জামাল নিজামের অনুসারীদের মাঝে।  তাদের অভিযোগ ৪২ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির অধিকাংশ নেতার ছাত্রত্ব নেই। অনেকই চাকরিজীবী ও বিবাহিত। অনেক নেতা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় নেই।

সুত্রমতে, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের ক্ষোভকে ব্যবহার করে তাদের ফুঁসিয়ে তুলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান এবং সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান দীর্ঘদিন ধরে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিস্ক্রিয় রয়েছেন। সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা গেলেও দলের কর্মসূচীতে থাকেন না। এমন অবস্থায় এনামুল হক এনামুল হক এনামকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটিকে অন্তভুক্ত করার পর থেকেই । দক্ষিণ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়া  সরওয়ার জামাল নিজামের অনুসারীরা প্রকাশ্যে আসলেও, গোপনে কেন্দ্রীয় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন জেলার আহবায়ক সুফিয়ান ও মোস্তাক আহমেদ।

বিভিন্ন সুত্রমতে, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন আহবায়ক  কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য  ব্যারিস্টার মীর হেলাল।

গেল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পদবঞ্চিত ছাত্রদল কর্মীরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা  দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি করার নেপথ্য কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক  মাহববুরের রহমান শামীম এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক  এডভোকেট এনামকে দায়ী করে।

তারা লিখিত বক্তব্যে  অভিযোগ করেছেন  ছাত্রদলের এই কমিটি নিয়ে দুই বিএনপি নেতা বাণিজ্য করেছেন। দলের আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করা কর্মীদের স্থান দেওয়া হয়নি। যারা আন্দোলন-সংগ্রামে কোনো ভূমিকা রাখেনি অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।

পদবঞ্চিতদের ক্ষোভ সম্পর্কে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান  বলেন, ‘ঘোষিত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তারপরও সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কাজ করে যেতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনের পরদিন বিএনপি নেতা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এনামকে পেটানোর সিদ্ধান্ত নেয় সংক্ষুব্ধরা। ঘটনার সময় দক্ষিণ জেলা  যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহানের অনুসারীদেরও হামলার সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়  দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। কর্মসূচি পালন ও দলীয় নির্দেশনা অমান্যকারী নেতাকর্মীদের বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় না দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দলীয় ফোরামে। সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে ঝিমিয়ে পড়া ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পর যেসব নেতা সংক্ষুব্ধদের দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন তাদের বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।

এইবাংলা /তুহিন

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর