নিজস্ব প্রতিবেদক :::
ভারতের উজানে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বর্ষণে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধে ৫টি স্থানে ভাঙ্গনে লোকালয়ে ঢুকছে পানি। পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও ফুলগাজী কাঁচাবাজারে পানি উঠেছে। এতে প্রায় ১০গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রোববার রাতে উপজেলার ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া ও দক্ষিন বরইয়া এবং সকালে ক্ষিন দৌলতপুর ও পূর্ব ঘনিয়ামুড়া এ ভাঙন দেখা দেয়। এর পরথেকে এতে লোকালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে৷
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, রাতে বরইয়া গ্রামের এনাম মিয়ার বাড়ির পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। রাত থেকে লোকালয় তলিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি,ওই এলাকায় দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঞা বলেন, মুহুরী নদীর পানির চাপ এখনো কমেনি নদীর আশপাশের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বাড়ছে। দুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষথেকে নগদ ২লাখ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ফুলগাজীর মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধে এবং পরশুরামের কহুয়া নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু এর জন্য স্থায়ী কোনো সমাধান নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ নদীপাড়াবসাীর। তাদের অভিযোগ প্রতি বছর এ দুই নদীর রক্ষা বাঁধরক্ষার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্ত কোন লাভ হয়না। পানিউন্নয়ান বোর্ড ও ঠিকাদারা কোন প্রকার বাঁলির বাধ দিয়ে টাকা লুট পাট করে নেয়। প্রতিবছর একই স্থানে ভাঙ্গেপড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফেনী এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, টেকসই বাঁধ মেরামতের জন্য ৭৩১ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হবে নিরীক্ষণ শেষে। নদীতে পানির প্রবাহ কিছুটা কমে আসলে ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হবে বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ফুলগাজী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কে এইচ এম মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ বন্যায় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় প্রায় ১২০ সেক্টর রোপা আমান এবং ১০ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে রয়েছে। এছাড়া মানুষের সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি থাকায় এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ হয়নি, পানি কমলে আসলে ক্ষতি নিরূপণ করা হবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার এবেলাকে বলেন, আমি সরেজমিনে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি । প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য ২ লক্ষ টাকা ও সাড়ে তিন মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছি। পানি বন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে । বিভিন্ন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এইবাংলা/প্রিন্স আচার্য্য/সিপি