24.5 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

কালুরঘাট ফেরি চালুর প্রথম দিনেই ডুবলো পল্টুন

আরও পড়ুন

তানভীর আহমেদ :::

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু সংস্কার করার দাবি দীর্ঘদিনের। চট্টগ্রামের ৯২ বছরের পুরনো কালুরঘাট সেতুটি সংস্কার করছে রেলওয়ে।কালুরঘাট সেতু সংস্কারের কাজ করাকালীন যান চলাচলের জন্য ফেরি চালু করার প্রথম দিনেই জন দূর্ভোগ চরমে। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেল পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ কারণে সেতুটি মেরামত করার জন্য (১ আগস্ট) থেকে পরবর্তী তিন মাস বন্ধ থাকবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট সেতুটি।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার  সকাল থেকে এ সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সংস্কার কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেতু বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ।মঙ্গলবার সকাল থেকে সেতুর নিচে ফেরি দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিনেই ফেরির পল্টুন ডুবে যানবাহন  চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু দিয়ে কোন রকমে পারাপার করতে পারলেও তার চেয়েও দুর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।

মঙ্গলবার দুপুরে বাসচালক আব্দুল  করিম জানান, ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হবার কারণে সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।  ‘

ফেরির পল্টুন ডুবে যাবার কারণে বিকল্প পথে সেতু পার হতে গিয়ে  বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে দুই পারের যানবাহনগুলোকে। এসময় সেতুর দুই পারের শতাধিক বাস, ট্রাক আটকে যায়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ চলার সময় যানবাহন পারাপারে সেতুর নিচে তিনটি ফেরি  সার্ভিস চালু করা হয়েছে । তিনটির মধ্যে দুটি ফেরি চলাচল করবে, একটি অপেক্ষমাণ থাকবে। গত শুক্রবার থেকে তিনটি ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার ফেরি দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে ডুবে যান পল্টুন। ফলে যাত্রী ও পরিবহন চালকদের দূর্ভোগ চরমে পৌঁছে।

জানা যায়,  আগামী সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ট্রেন লাইনসহ সেতুর ডেকিং, পাটাতন মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। মেরামতের পর এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মতো ছুটবে পর্যটন নগরী কক্সবাজার রুটের আধুনিক যাত্রীবাহী ট্রেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘ কালুরঘাট সেতু সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আজ থেকে সেতুটির ডেকিং ডিসমেন্টলিং কাজ শুরু করবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে সাইটে নির্মাণ সামগ্রী ও ইক্যুইপমেন্ট মোবিলাইজেশন শুরু করেছে। সেতু সংস্কার ও নবায়নের পাশাপাশি পথচারীদের পারাপারের জন্য নতুন ভাবে পৃথক একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। মেরামত চলাকালীন সময়ে সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। যানবাহন বিকল্প পথে চলাচলের জন্য আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। ফেরি দিয়েও যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ভারী যানবাহন গুলো শাহ আমানত সেতু দিয়েও যাতায়াত করতে পারবে। ‘

ফেরি সার্ভিস চালুর সাথে সাথে ফেরি দিয়ে পারাপারে যানবাহনের টোল আদায়ের হারও নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন  বলেন, সেতু মেরামতের কাজ শুরু হলে সকল যানবাহন ফেরি দিয়ে চলাচল করবে। ফেরি পারাপারের জন্য মোট তিনটি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। ২টি ফেরি সবসময় চলাচল করবে এবং ১টি স্ট্যান্ডবাই থাকবে। ফেরি পারাপারের টোল আদায়ের হারও নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘

ট্রেইলার পারাপারে টোল নেয়া হবে ৫৬৫ টাকা, হেভি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ৪৫০ টাকা, ২ এক্সেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, মিনি ট্রাক ১৭০ টাকা, পাওয়ার ট্রিলার–ট্র্যাক্টর ১৩৫ টাকা, মিনিবাস (৩০ জনের) ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, জিপ ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, সিএনজি টেক্সি ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিকশার টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা  বলেন, ‘ এখন পর্যন্ত ফেরির টোল আদায়ে ইজারাদার পাওয়া যায়নি। অল্প সময়ের জন্য লাভজনক হবে না ভেবে কোন প্রতিষ্ঠান কোন প্রতিষ্ঠান হয়তো আগ্রহী হচ্ছে না। তবে সওজের ব্যবস্থাপনায় টোল আদায় হবে।’

এইবাংলা/ তুহিন

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর