25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

এবার দুদকের হাতে চসিকের মশার ওষধ কেলেঙ্কারির প্রমাণ

আরও পড়ুন

নাদিরা শিমু,চট্টগ্রাম ::

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ উপ বিভাগ থেকে শুরু করে পরিছন্নতা বিভাগ – অনিয়ম আর দূর্নীতির জালে আটক পড়েছে পুরো নগর ভবন৷ এবার মশার ওষধ কেলেঙ্কারির প্রমাণ মিলেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানে৷

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী চালানো অভিযানে মশা মারার ওষুধ কেনায় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সুত্রমতে,  গেল একমাসের বেশি সময় ধরে চসিকের বিভিন্ন দপ্তরে নজর রাখছিলো দুদক৷ বৃহস্পতিবার চালানো অভিযানে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালানো দুদকের তদন্ত টিম। মশার ওষুধ নিয়ে অনিয়মের গোপন সূত্র ধরে এ অভিযান চালায় তারা।

অভিযানের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটা অভিযোগ ছিল, চসিকে মশার ওষুধ কেনায় দুর্নীতি হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডিসেম্বর ২১ থেকে অক্টোবর ২২ পর্যন্ত ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু একই ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে ৫ লাখ টাকার নিচে রাখতে ১৬ লটে ভাগ করে ওষুধ কেনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন,‘কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে আমরা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। বাকিটা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র ছাড়াই চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক অরভিন সাকিব ওরফে ইভান নামের এক নেতার কাছ থেকে দীর্ঘদিন থেকে কেনা হয় এসব মশার ওষুধ। ওষধের টেন্ডারে অনৈতিক  বাণিজ্যের বিষয়টি চসিকে ওপেন সিক্রেট।

দুদকের অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম  বলেন, ‘যেসব ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে  অনিয়মের  অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, তার অধিকাংশ আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে কেনা হয়েছিল। আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছিল।’

সাম্প্রতিক সময়ে ঠিকাদারির কাজ ভাগাভাগি ইস্যুকে কেন্দ্র উর্ধতন মহলের ইশারায় চসিকের একটি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি গোলাম ইয়াজদানিকে মারধর করা হয়। এছাড়া ২৬০ কোটি টাকার এলইডি প্রকল্পের দরপত্রে প্রকল্প পরিচালক ঝুলন কুমার দাশের নজিরবিহীন অনিয়মের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয় নি চসিক। ভারতের ঋন সুবিধার এই প্রকল্পের দরপত্রে  প্রকল্প পরিচালকের পক্ষপাতমুলক আচরনের অভিযোগ জমা পড়েছে ভারতীয় দূতাবাসে।  বিষয়টি গড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত।এছাড়া গৃহকরের আপিল ইস্যুতে রাজস্ব বিভাগে দুইশো কোটি টাকা ঘুষ বিনিময়ের অভিযোগও সংস্থাটির কাঁধে। সুত্রমতে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনিয়ম, দূর্নীতির সিন্ডিকেট ভাঙার নির্দেশ নেয়া হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে।

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর