24.5 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

হরতাল, অবরোধ করিনি- জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই সরকারকে ফেলে দেব

আরও পড়ুন

::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় নোয়াখালীতে আজ বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ৩টায় নোয়াখালী শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে এই কর্মসূচি শুরু হয় ।

পদযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিকেল চারটার দিকে নোয়াখালীতে বিএনপির পদযাত্রার আগে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ এবার বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ জেগে উঠেছে। সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়, এক দফা এক দাবি।’

বিএনপি মহাসচিব এক দফার আন্দোলনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘এই দাবি আমরা কেন করেছি? কারণ, এখন যে সরকার বসে আছে, তারা কি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার? না। আপনারা ভোট দিতে পেরেছিলেন? না। ২০১৪ সালে কোনো নির্বাচনই হয়নি। কোনো নির্বাচন ছাড়া ১৫৪ জনকে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি ঘোষণা করে দিল। তারপর তারা পার্লামেন্টে গিয়ে নতুন নতুন আইন তৈরি করে আরও অত্যাচার–নির্যাতন বাড়িয়ে দিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে পুলিশ, র‍্যাব এমনকি বিচার বিভাগকে পর্যন্ত ব্যবহার করে সরকার এই দেশের মানুষের সব অধিকারকে কেড়ে নিয়ে গেছে। আমরা কথা বললেই মামলা। না বললেও মামলা। গায়েবি মামলা। সারা দেশে দেড় লাখ গায়েবি মামলা করেছে। ৪০ লাখ মানুষকে গায়েবি মামলার আসামি করা হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা হরতাল করিনি। আমরা অবরোধ করিনি। আমরা মনে করছি, এখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারকে ফেলে দেব। এই পদযাত্রা করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করব ইনশা আল্লাহ।’

নোয়াখালীতে বিএনপির পদযাত্রার পূর্বে সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের একাংশ। শুক্রবার বিকেলে শহীদ ভুলু ষ্টেডিয়ামেনোয়াখালীতে বিএনপির পদযাত্রার পূর্বে সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের একাংশ। শুক্রবার বিকেলে শহীদ ভুলু ষ্টেডিয়ামে
গুমের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে এখানে মুন্নার মা (বিমানবন্দর থানা ছাত্রদল নেতা নিজাম উদ্দিন মুন্না) আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁর ছেলে ১২ বছর ধরে গুম হয়ে আছে। আমাদের লাকসামের হিরু এমপি (কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু) ছিল, গুম হয়ে গেছে। উত্তরায় আমার প্রতিবেশী ছিল মুন্না। সে ২০১২ সালে গুম হয়ে গেছে। তাকে খুঁজতে খুঁজতে তার বাবা মারা গেছেন। তার মা এখনো প্রতিদিন আমাকে ফোন করে ছেলেটার কোনো খোঁজ পাওয়া গেছে কি না জানতে চান। এভাবে অসংখ্য মা তার ছেলের জন্য অপেক্ষা করছেন। অসংখ্য স্ত্রী তাঁর স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছেন। অসংখ্য শিশু ভাবে, কখন তার বাবা ফিরে আসবে।’

 

এই পদযাত্রায় প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

এদিকে,  পদযাত্রা ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন  কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ আজাদ, মাহবুব আলমগীর আলো, ছাত্রদল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক মনজুরুল আজম সুমন, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, জেলা বিএনপির সদস্য মো.গোলাম মোমিত ফয়সাল, জেলা শ্রমিকদলের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন।

এসময় জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ আজাদ বলেন, তারুণ্যের সমাবেশের পাশাপাশি শ্রমিক দল, কৃষক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল ও জাসাসের যৌথ উদ্যোগে দেশ বাঁচাতে মেহনতি মানুষের পদযাত্রা সরকার বিরোধী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। নোয়াখালীতে পাঁচ সংগঠনের যৌথভাবে পদযাত্রা কর্মসূচি পালনে শ্রমজীবী মানুষের নবজাগরণ ঘটিয়েছে ।

এইবাংলা /হিমেল

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর