Become a member

Get the best offers and updates relating to Liberty Case News.

― Advertisement ―

spot_img

ভাঙ্গা–বরিশাল–কুয়াকাটা চার লেন সড়ক প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ শুরু

বরিশাল প্রতিনিধি : দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুদিনের প্রত্যাশিত ভাঙ্গা–বরিশাল–পটুয়াখালী–কুয়াকাটা চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে বড় অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যে বরিশাল অংশে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে...
Homeইসলামী জীবনব্যক্তিগত ও জাতীয় সংকটে মুমিনের ১০ কাজ

ব্যক্তিগত ও জাতীয় সংকটে মুমিনের ১০ কাজ

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা :

পার্থিব জীবনে আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদের নানা সংকটের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন। এসব বিপদ ও সংকটের দ্বারা তাদের পাপ মার্জনা এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমাদের কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।

দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

যারা তাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। এদের প্রতি স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে বর্ষিত হয় বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমত। আর এরাই সৎপথে পরিচালিত।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫৫)
আলোচ্য আয়াতে ধৈর্য ও আল্লাহমুখী হওয়ার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—তার আলোকে বিশেষজ্ঞ আলেমরা ১০টি কাজের কথা বলেন।

যার মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি বিপদ থেকে মুক্তি ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে পারে।
১. আল্লাহমুখী হওয়া : কোনো বিপদ বা সংকটে পড়লে মুমিনের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো আল্লাহমুখী হওয়া। আল্লাহ বলেন, ‘আমার শাস্তি যখন তাদের ওপর আপতিত হলো তখন তারা কেন বিনীত হলো না? অধিকন্তু তাদের হৃদয় কঠিন হয়েছিল এবং তারা যা করছিল শয়তান তা তাদের চোখে শোভন করেছিল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৪৩)

২. আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করা : বিপদ থেকে মুক্তির ব্যাপারে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা এবং বিপদে পড়ার কারণে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ না করা।

বরং আল্লাহর কাছে মুক্তি ও কল্যাণ কামনা করা। হাদিসে কুদসিতে (রাসুলের জবানে আল্লাহর ভাষ্য) এসেছে, ‘আমি বান্দার সঙ্গে আমার প্রতি তার ধারণার অনুরূপ আচরণ করি।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৫০৫)

৩. অবিরাম দোয়া করা : অবিরাম দোয়া ও প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ মুমিনের বিপদ ও সংকট দূর করে দেন। আল্লাহ বলেন, ‘বরং তিনিই আর্তের আহ্বানে সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদ দূর করেন।…’

(সুরা : নামল, আয়াত : ৬২)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে প্রশ্ন করে, আমি তো তাদের কাছেই।

আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও আমার আহ্বানে সাড়া দিক এবং আমাতে ঈমান আনুক—যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৬)

৪. বেশি বেশি ইস্তিগফার করা : ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা বিপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করে এবং জীবনে প্রাচুর্য আনে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলেছি, তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি তো ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন। তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।’

(সুরা : নুহ, আয়াত : ১০-১২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার পড়লে আল্লাহ তাকে সব বিপদ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করবেন, সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে জীবিকা দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫১৮)

৫. বেশি বেশি জিকির করা : সংকটকালে বেশি বেশি আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করা আবশ্যক। কেননা এতে মানসিক অস্থিরতা কমে। তাসবিহ পাঠ, মাসনুন দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি জিকিরের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়। জেনে রেখো! আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্ত হয়।’

(সুরা : রাদ, আয়াত : ২৮)

৬. পারস্পরিক সহযোগিতা : বিপদ, বিপর্যয় ও সংকটের সময় মুমিনরা পরস্পরের সহযোগিতা করবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সৎকাজ ও আল্লাহভীতিতে পরস্পরের সহযোগিতা করবে এবং পাপ ও সীমা লঙ্ঘনে একে অপরের সহযোগিতা করবে না।’

(সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২)

৭. আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা : মুমিন সর্বাবস্থায় আল্লাহর ভরসা করে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনি তার জন্য যথেষ্ট।’

(সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর ওপর যথাযথভাবে ভরসা করতে পারো, তবে তিনি তোমাদের পাখির মতো জীবিকা দান করবেন—সে সকালে খালি পেটে বের হয় এবং বিকেলে ভরা পেটে ঘরে ফেরে।’

(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৪)

৮. ধৈর্য ধারণ করা : যেকোনো বিপদ ও সংকটে মুমিন ধৈর্য হারা হবে, বরং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা মোকাবেলা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুমিনের বিষয়টি কত চমৎকার। তার জন্য শুধুই কল্যাণ—কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই নেই। যদি তার জন্য কোনো খুশির ব্যাপার হয় এবং সে কৃতজ্ঞতা আদায় করে, তবে সেটা তার জন্য কল্যাণকর। আর যদি কোনো দুঃখের বিষয় হয় এবং সে ধৈর্য ধারণ করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণকর।’

(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯)

৯. নামাজের মাধ্যমে সাহায্য : বিপদ ও সংকটে আল্লাহ মুমিনদের নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। এটা বিনীত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের জন্য অবশ্যই কঠিন।’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ৪৫)

১০. আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান আশা করা : বিপদ-আপদের কারণে মুমিনের যে পার্থিব ক্ষতি ও কষ্ট হয়, তার বিনিময়ে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। সুতরাং মুমিন সংকটকালে ধৈর্য ধারণ করবে এবং আল্লাহর কাছে এর উত্তম প্রতিদান আশা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে—এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফুটে এসবের বিনিময়ে আল্লাহ‌ তার গুণাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস :  ৫৬৪১)

এই বাংলা/এমএস

টপিক