টানা কয়েক দিনের সংঘাত, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও পাল্টা আঘাতে বিপর্যস্ত মধ্যপ্রাচ্যের দুই বৈরী দেশ ইরান ও ইসরায়েল। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েল বড় পরিসরের হামলা শুরু করলে, পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে ইরানও। এখন পর্যন্ত ইরানে ৪৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “আমরা জানি তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি সহজ লক্ষ্যবস্তু। তবে এখনই আমরা তাকে সরিয়ে (হত্যা) আনছি না।”
এই হুমকির পরই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন খামেনি। মঙ্গলবার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “মর্যাদাবান হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো।” ইসলাম ধর্মের ইতিহাস অনুযায়ী, ‘হায়দার’ হচ্ছেন ইসলামের চতুর্থ খলিফা ইমাম আলী (রা.), যিনি শিয়া মুসলিমদের কাছে প্রথম ইমাম হিসেবে পরিচিত।
খামেনি আরও বলেন, “ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা ওদের কোনো দয়া দেখাব না।” তিনি পুনরায় জানিয়ে দেন, ইরান ইসরায়েলের হামলার কঠিন প্রতিশোধ নেবে।
সংঘাতের এই মুহূর্তে ট্রাম্প একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন। এক পোস্টে তিনি বলেন, “ইরানের আকাশসীমা এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে।” আরেক পোস্টে দাবি করেন, “আমরা চাই না বেসামরিক নাগরিক কিংবা আমাদের সৈন্যদের ওপর হামলা হোক। আমাদের ধৈর্য ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে।” পরপর তৃতীয় একটি পোস্টে ট্রাম্পের ঘোষণা— “নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ!”
এদিকে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে যখন জানা গেছে, ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তার একটি বাসায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে ইরানও ‘শনাক্ত করা অসম্ভব’ এমন অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলকে টার্গেট করছে বলে দাবি করেছে তাদের সামরিক বাহিনী।
বিশ্লেষকদের মতে, এখন যেকোনো মুহূর্তে এই আঞ্চলিক উত্তেজনা পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে গড়িয়ে পড়তে পারে।