25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধিতে দর্শনার্থীদের ভিড়

আরও পড়ুন

বিপ্লব তালুকদার (খাগড়াছড়ি)

রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে কাপ্তাই লেকের ছোট্ট এক দ্বীপে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন বাঙ্গালির অন্যতম এক বীর সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ। অথৈ নীল জল পরিবেষ্টিত সমাধি স্থলে লেখা “তুমি দুর্জয়, নির্ভীক মৃত্যুহীন এক প্রাণ” কথাগুলো যেন তাঁর গৌরবজ্বল বীরত্বের এক অনন্য প্রকাশ।

প্রতিবছর স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস ও বিভিন্ন উৎসবে সরকারি বন্ধ পরলে দূর দূরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী মুক্তিযুদ্ধের মহান এই নায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এছাড়া সমাধি স্থলে যাওয়ার পথে নানিয়ারচরের আনারস বাগান, কাপ্তাই লেকে দলবেধে চলা ইঞ্জিন চালিত নৌকা এবং চারপাশের অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্যও সকলকে মুগ্ধ করে।

১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটির মহালছড়ি থানার বুড়িঘাট চিংড়ি খাল এলাকার পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিল। সেদিন হঠাৎ ভারি অস্ত্র বোঝাই তিনটি লঞ্চ ও দুইটি স্পীড বোট মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলে।

হানাদার বাহিনীর আকস্মিক আক্রমনে মুন্সি আব্দুর রউফ মেশিনগান নিয়ে একাই শত্রুদের সাথে লড়াই করে তাঁর সহযোদ্ধাদের নিরাপদে সরে যেতে সাহায্য করেন। যুদ্ধে হানাদার বাহিনির দুটো লঞ্চ ও একটি স্পীড বোট পানিতে ডুবে যায়, মারা যায় দুই প্লাটুন সৈন্য।

আকস্মিক হানাদার বাহিনীর ছোড়া একটি মর্টারের আঘাতে মুন্সি আব্দুর রউফ শাহদাত বরণ করেন। পরবর্তীতে বুড়িঘাট ভাঙ্গামুড়া এলাকার স্থানীয় দয়াল চাকমা তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে কাপ্তাই লেকের ছোট্ট দ্বীপে সমাহিত করেন। ১৯৯৬ সালের ২৫ এপ্রিল মুন্সি আব্দুর রউফের সহযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সমাধিস্থল চিহ্নিত করা হয়। ২০০৬ সালের ২৫ মার্চ রাইফেলের ভাস্কর্য সংবলিত স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধিস্থলে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে, কমলাপুর, ফকিরাপুর, গাবতলি বা কলাবাগান হতে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিগামী বিভিন্ন বাস সার্ভিস রয়েছে। খাগড়াছড়ি পৌঁছে নানিয়ারচর হয়ে ইঞ্জিন চলিত নৌকা নিয়ে সমাধিস্থত যেতে পারবেন। আর রাঙ্গামাটি শহর থেকে গাড়ী রিজার্ভ নিয়ে জেটিঘাট এসে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় সমাধিস্থল যাওয়া যায়।

রাঙ্গামাটি থেকে নানিয়ারচরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। নানিয়ারচরের ঘাট থেকে সমাধিস্থল যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টার মত সময় লাগে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর