25.2 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

পঞ্চগড়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার দাবি জামায়াতের আমিরের

আরও পড়ুন

উমর ফারুক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:

জামায়াতের আমির বলেন, পঞ্চগড় কৃষিভিত্তিক এলাকা। পঞ্চগড়ে প্রচুর পরিমানে কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। কিন্তু এসব সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। এগুলো সংরক্ষণ করলে কিছুটা ন্যায্য দাম পাবেন কৃষক। আপন আপন ন্যায্য মূল্য পাওয়া সম্ভব। আমি দাবি করবো এখানে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা হোক।

পঞ্চগড়ের জন্য এটি হবে সবচেয়ে বেশি উপকারি। শিক্ষিত হয়ে বেকার হওয়ার চাইতে একজন কৃষিজীবী এক সেকেন্ডের জন্য কখনো বেকার থাকে না। আমরা সেরকম একটা শিক্ষা বন্দোবস্তের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, অনেকেই মনে করে আমি মনে হয় সরকার চালাই। না, আমিও আপনাদের মতো সাধারণ পাবলিক। তবে আমাকে বোঝা মহান আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। যখন কোনো দাবি যৌক্তিক মনে করি সেটাকে আমি প্রাধান্য দেই। আপনাদের দাবির সঙ্গে আমিও একমত।

আপনাদের কথা দিচ্ছি ইসলাম প্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণের দ্বারা যদি সরকার গঠন করা হয় তাহলে আপনাদের দাবি আমার দাবি।

দাবি আর উত্থাপন করতে হবে না। বরং বৈষম্যহীন বাংলাদেশে যে এলাকা বঞ্চিত, সে এলাকায় সবার আগে কাজ করা হবে ইনশাআল্লাহ। আর যেসব এলাকা বৈষম্য নেই, তারা পাবেন ন্যায্যতার হিসাব। কাউকে বঞ্চিত করা হবে না।

ছাত্রদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, আমি ছাত্র ভাইদের বলছি। একদিনের জন্য তোমাদের বেকারত্বের অভিশাপের বোঝা বহন করতে হবে না। পড়াশোনা শেষ করে তরুণরা সার্টিফিকেট নিয়ে বের হবে। সাথে সাথে তাদের কাজের ব্যবস্থা হবে। মা-বোনদের বলতে চাই তোমাদের উন্নয়নে সমাজের উন্নয়ন।

এমন একটা মানবিক বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।ভারত প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে অহেতুক কষ্ট দিতে চাই না। তবে আমাদের প্রতিবেশীও যাতে আমাদের ওপর এমন কিছু চাপিয়ে না দেয়, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য সম্মানজনক নয়। যদি এ রকম তারা কিছু করে, দেশের স্বার্থে আমরা সেদিন ভূমিকা পালন করতে কারো চোখের দিকে তাকাবো না।

আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে, বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে আজকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যত ঘটনা ঘটেছে সেগুলো অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। তাহলে জনগণ জানতে পারবে। কারা সত্যিকার অর্থে মানুষ খুন করেছে, ইজ্জত লুন্ঠন করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বাংলাদেশকে আর গডফাদারদের দেশ দেখতে চাই না, গডমাদারদের বাংলাদেশ, মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।

সংখ্যালঘুদের বিষয়ে জামায়াতে আমির বলেন, কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুরু। এদেশে যেই জন্ম নিয়েছে, সেই এদেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা নাগরিকদের ভাগ বাটোয়ারা কোনো ধর্ম বা দলের ভিত্তিতে করার পক্ষে নই। অতীতের পতিত স্বৈরাচারী জাতিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে মুখোমুখি লাগিয়ে রেখেছিল।

যে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে না, সে দেশের মানুষ মাথা সোজা করে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সাথে দাঁড়াাতে পারে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর গেল, আর কতদিন আমাদেরকে টুকরো টুকরো করা হবে। আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা আমরা কোনো মেজোরিটি বা মাইনোরিটি মানি না। ২০২২ সালে পঞ্চগড়ে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিহত ৭২ জনের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদেরকে আমরা আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ধারণ করলাম। যতদিন বেঁচে থাকি, সেই ফিলিংস নিয়ে বেঁচে থাকব ইনশাআল্লাহ।

আমরা বাংলাদেশকে একটি মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ সময় তিনি নৌকাডুবির শিকার এক পরিবারের দুই শিশুর সাবালক হওয়া আগ পর্যন্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

এর আগে জেলার ৫ উপজেলা ও পৌরসভা এবং ইউনিয়ন থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জনসভায় আসেন জামায়াত, শিবির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর