25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

দালালের খপ্পরে পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহন বাংলাদেশি যুবক নিহত

আরও পড়ুন

আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি :

নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির ও তার দুলাভাই রহমত আলী সংসারের সচ্ছলতা আর সন্তানদের ভবিষ্যতের আশায় রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন।

কিন্তু সেখানে দালালের খপ্পরে পড়ে চাকরির নামে অংশ নিতে হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন হুমায়ুন কবির। আর দুলাভাই রহমত আলী ফিরতে চান দেশে।

ছেলের মৃত্যু আর জামাইকে ফিরে পেতে কেঁদেই চলেছেন কারীমুন বেগম।

গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বিলাপ করে চলেছেন। তার দাবি, অন্তত ছেলের মরদেহ যেন তিনি শেষবারের মতো দেখতে পারেন।

জানা যায়, হুমায়ুন কবির (২৮) ও জামাতা রহমত আলী (৪০) দালালদের প্রতারণার শিকার হন। প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিবার ১৮ লাখ টাকা খরচ করে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাশিয়ায় পাঠায়।

প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব, তারপর টুরিস্ট ভিসায় রাশিয়ায় নেয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের বাধ্য করা হয় যুদ্ধে অংশ নিতে।

তিন মাসের মাথায় আসে নির্মম সংবাদ। ২৬ জানুয়ারি ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয় হুমায়ুন কবিরের। স্বামীকে হারিয়ে এক বছরের মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন হুমায়ুনের স্ত্রী তারা বেগম। তিনি দালালদের শাস্তি দাবি করেছেন।

হুমায়ুনের বড় বোন মেঘনা বেগম জানান, চলতি মাসের ২০ তারিখে হুমায়ুন ও রহমত জানান তাদের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। এরপর ২৬ জানুয়ারি রহমত জানায় হুমায়ুনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে মরদেহ ফেরত আনার দাবি জানান।

হুমায়ুনের বন্ধু মাহমুদ জানান, দালালের খপ্পরে পড়ে তার পরিবারের সর্বনাশ হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে, এমনটাই প্রত্যাশা তার।

ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস লিমিটেড কোম্পানিতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা অফিস বন্ধ করে পালিয়েছে। স্থানীয় দালালদের ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় জনগণ সরকারের কাছে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।

হুলহুলিয়া গ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সহ-সভাপতি শাকিল আহম্মেদ তপু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের প্রতিশ্রুতি দেন।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন, তবে দ্রুত খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

পরিবার ও স্থানীয়রা দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, হুমায়ুন কবিরের মরদেহ ফেরত আনা এবং রহমত আলীকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর