বরিশাল প্রতিনিধি :
বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেক মৎস্য খামারি মাছের খাদ্যে মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করছেন। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, এর ফলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই অনেক সচেতন ব্যক্তি চাষের মাছ খাওয়া বন্ধ করেছেন।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন দিঘি, পুকুর ও ঘেরের ওপর লেয়ার ও ব্রয়লার খামার তৈরি করে মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এসব খামারের বিষ্ঠা সরাসরি পানিতে পড়ে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় খামারিদের কাছ থেকে কম দামে বয়লার মুরগির লিটার (বিষ্ঠা) সংগ্রহ করে খামারিরা মাছের খাদ্যে ব্যবহার করছেন।
২০১৯ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাসের উদ্যোগে এক সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে খামারিরা মুরগির বিষ্ঠার ব্যবহার ধাপে ধাপে বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে কর্মকর্তার বদলির পর উদ্যোগটি থেমে গেছে। খামারিরা দাবি করেন, আগে সরকার মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষে উৎসাহ দিত, কিন্তু বর্তমানে মৎস্য খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে এ পদ্ধতি অনুসরণ করছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ দেবনাথ বলেন, “মুরগির বিষ্ঠা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে এবং পুকুরের পানি দূষিত হয়। আমরা খামারিদের সচেতন করছি।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ সরকার জানান, “মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার সম্পূর্ণ অবৈধ। প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হবে, তারপরও না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কম্পোস্ট বা বায়োগ্যাস তৈরিতে ব্যবহার করলে কোনো সমস্যা নেই।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহতা জারাব সালেহীন বলেন, “মুরগির খাবারে থাকা অ্যান্টিবায়োটিক ও রাসায়নিক উপাদান মাছের শরীরে গিয়ে ক্যানসারসহ জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. ইব্রাহিম বলেন, “মাছ চাষে মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার কোনোভাবেই অনুমোদিত নয়। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে খামারিদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”
এই বাংলা/এমএস
টপিক
