25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

লিবিয়ায় জিম্মি নাটোরের ৪ যুবক,নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি-বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি

আরও পড়ুন

আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-

সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে দুই বছর আগে লিবিয়ায় পাড়ি জমান নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চার যুবক। লিবিয়া যেতে নিজেদের শেষ সম্বল গরু-ছাগল,জমি বিক্রি করে এমন কি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাঠান তাদের পরিবার।

দুই বছর যেতে না যেতেই যেন সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। গত কয়েক দিন আগে লিবিয়ায় অপহরণের স্বীকার হন বাংলাদেশী চার যুবক। তাদের জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে চাওয়া হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এমনকি জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হচ্ছে পরিবারের কাছে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তাদের হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। এমন খবরে জিম্মি যুবকদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। কান্না আর দুচিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন অসহায় পরিবারগুলো।

জিম্মি ৪ যুবক নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে সোহান প্রামাণিক (২০), তয়জাল শেখের ছেলে সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) এবং ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবনে পাড়ি দেন তারা। প্রবাসে গিয়ে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। প্রতিমাসে ১৫/২০ টাকা দেশে পরিবারকে পাঠান। কিন্তু গত ২ জুন লিবিয়া থেকে চার প্রবাসীর পরিবারের কাছে ইমো নম্বরে কল আসে। রিসিভ করতেই বাংলা ভাষায় চার যুবককে অপহরণের কথা জানিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। এ মুক্তিপণ না দেওয়া হলে চারজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এ খবরের পর থেকে তাদের পরিবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জিম্মিদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের ইমো নাম্বারে পাঠায়। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিন বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছেন অপহরণকারীরা।

জিম্মির কথা স্বীকার করে সোহানের বাবা শাজাহান প্রামাণিক বলেন, কয়েক দিন আগে তার ইমো নম্বরে লিবিয়া থেকে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলে সোহান বলে, আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসছে। ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলবে আমাকে। সোহানকে একটি কক্ষে বেঁধে রেখে মারধর করে ভিডিও পাঠায় আমাদের কাছে। ৪ লাখ টাকা খরচে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। এখনও সেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। মুক্তিপণের টাকা কোথায় থেকে দেব।

জিম্মি আরেক যুবক নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর জন্য স্বামীকে ৪/৫ লাখ টাকা ঋণ করে লিবিয়া পাঠায়। সেই ঋণেরর টাকাই শোধ করতে পারিনি। এখন কি করে মুক্তিপণের এত টাকা জোগার করব।

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সুজা জানান, লিবিয়ায় তার গ্রামের চার যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলে জেনেছি। যুবকরা যেন সুস্থ্য হয়ে দেশে ফিরতে পারেন সেজন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

গুরুদাসপুর থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, লিবিয়ায় অপহরণের স্বীকার চার যুবকের কথা শুনে আমরা তাদের বাড়িতে যাই। বাড়িতে স্বজনরা আহাজারি করছেন। ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

এইবাংলা/নাদিরা শিমু/Ns

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর