25.6 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

৫০ ইউরোপীয় চিকিৎসককে জরিমানা, ক্ষোভ ঝাড়লেন মোমেন

আরও পড়ুন

অনলাইন ডেস্ক

বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে এসে জরিমানার শিকার হয়েছেন ৫০ চিকিৎসক। এ ঘটনায় বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোমেন। তিনি বলেন, ৫০ বিদেশি চিকিৎসকের এই টিমকে ব্রিটিশ প্রাইভেট ফাউন্ডেশন (তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন) বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। তারা বিনা পয়সার উন্নত চিকিৎসা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গরিবদের চিকিৎসা দেবেন।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিয়ম অনুযায়ী কোনও বিদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশে চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তবে আমাদের বিশেষ অনুরোধে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় তারা এক শর্তে রাজী হন। শর্ত হচ্ছে, স্পন্সর এজেন্সিকে প্রতিজন চিকিৎসক বাবদ ১৩ হাজার টাকা ও ভ্যাট দিতে হবে।

তিনি জানান, তাফিদা হলো একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ৯ বছরের মেয়ের নাম। মেয়েটির বয়স যখন ৪ বছর ছিল, অজানা অসুখের কারণে বহু মাস অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিল। মা-বাবা মেয়েটির হাসপাতাল খরচ বহন করতে না পারায় ব্রিটিশ সরকার তার মেশিন ও ভেন্টিলেটর ডিসকানেন্ট করবে বলে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে সারা ইউরোপে তোলপাড় হয়ে যায়। তখন ইতালি সরকার শিশুটির দায়িত্ব নেয়। তাফিদা বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ ও ভালো হয়ে উঠেছে। যখন ব্রিটিশ সরকার টাকার কারণে মেয়েটির ভেন্টিলেটর খুলে দিতে চেয়েছিল তখন বহু লোক মেয়েটির জন্য টাকা তোলে। ওই চ্যারিটির টাকায় তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশে এই ৫০ জন মেডিকেল বিশেষজ্ঞকে আনা-নেওয়া বাবদ প্লেনের টিকিট অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্স বিনা পয়সায় দিয়েছে। স্থানীয় হোটেল এদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। অথচ, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) একমাত্র ব্যতিক্রম।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বিদেশি ডাক্তারদের দেশের কোনো হাসপাতালে বিনা পয়সায় রোগী দেখা বা সেবা করা, এমনকি প্রদর্শনী শিক্ষা অপারেশন করাও নিষিদ্ধ। তবে কয়েক বছর আগে রোকেয়া ও রাবেয়া নামক দুটি সিয়ামিজ শিশুর চিকিৎসা আমাদের সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালের সহযোগিতা করে হাঙ্গেরি সরকার এবং সার্থক হয়। সর্বমোট প্রায় ১৩৯ জন (বাংলাদেশি ও বিদেশি) চিকিৎসক ও সহযোগী এতে কাজ করেন। বিএমডিসির কাছ থেকে তখন কোনো অনুমোদন নিতে হয়নি। কোনো চার্জ বা জরিমানা দিতে হয়েছে বলে শুনিনি। বর্তমানে হাঙ্গেরি ও বাংলাদেশের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় উদ্যোগে রোকেয়া রাবেয়ার কাহিনি উভয় দেশে বহুল আলোচিত। শুধু তাই নয়, রোকেয়া-রাবেয়ার সম্পর্কের পথ ধরে আমার অনুরোধে হাঙ্গেরি সরকার বাংলাদেশের ১৫০ ছাত্রছাত্রীকে ফুল স্কলারশিপ দিচ্ছে। রোকেয়া-রাবেয়ার কারণে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে আমার এখন একান্ত বন্ধু।

ড. মোমেন বলেন, ইউরোপের তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশের প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশন ও আরটিএম বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত চিকিৎসা সেবা বিষয়ক যে কো-অপারেশনের ব্যবস্থা করল, বিএমডিসি তাতে উৎসাহ না দিয়ে বরং জরিমানা করল। বিষয়টি অস্বাভাবিক। জ্ঞান নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকারবদ্ধ। বিএমডিসি প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর