মোহাম্মদ পারভেজ
সামনেই বসন্ত, ভালোবাসা দিবস এবং একুশে ফেব্রুয়ারি। উৎসব গুলোতে দেশে ফুলের চাহজ্ঞিদা বেড়ে যায় বহুগুনে। চাঙা হচ্ছে দেশের অর্থনীতিও। নতুন পণ্য তুলে ধরতে নামিদামি ব্র্যান্ডের শোরুম থেকে শুরু করে প্রস্তুত ছোট দোকানিরা। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যবসার বিকাশে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
দেয়ালে দেয়ালে বসন্ত বন্দনা, বাজারজুড়ে রঙিন কাপড়ের ছোঁয়া। তার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ৫২’র সাদাকালো ইতিহাস। একসঙ্গে কড়া নাড়ছে বসন্ত, ভালোবাসা দিবস এবং শহীদ দিবস। ফেব্রুয়ারি জুড়ে মেলবন্ধন ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের।
এ উৎসব কেবল ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক নয়, সে সঙ্গে চাঙ্গা করছে দেশের অর্থনীতিও। উৎসব মানে নতুন রঙ্গে সাজা, নিজেকে নতুন করে মেলে ধরা। সেই আয়োজনে পিছিয়ে থাকতে চান না কেউই।
উৎসব ঘিরে কেনাকাটায় ব্যস্ত এক ক্রেতা বলেন, নিজের পাশাপাশি ভাইয়ের জন্য পাঞ্জাবি দেখছি। সব কিছুতেই তো নতুনত্ব থাকে, সেই নতুনত্বের মাঝেই আমি যাতে নিজেকে মেলে ধরতে পারি, তার জন্য কেনাকাটা করছি।
প্রকৃতিকে পুঁজি করে উৎসব আমেজে নিজেদের পণ্যকে তুলে ধরতে নামিদামি ব্র্যান্ডের শোরুম থেকে শুরু করে ছোট দোকানদাররাও প্রস্তুত। তবে তারা কিছুটা হতাশ। তাদের দাবি, গত বছরের তুলনায় ক্রেতা কম।
এক বিক্রেতা বলেন, আমরা মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েছে। আমরা ছাড়ও দিচ্ছি। তবে আমরা তেমন একটা ক্রেতা পাচ্ছি না। সামনে ক্রেতা বাড়বে বলে আশা করছি।
ফাল্গুন এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ঘিরে বড় বাজার তৈরি হয় মূলত সবচেয়ে বড় দেশীয় কুটির শিল্প, দেশীয় পোশাক, হস্তশিল্পজাত গয়নাগাটি, ফুলসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজার। ২০২৩ সালে শুধুমাত্র ফুলের বাজারই ছিল প্রায় দেড়শ কোটি টাকার মতো। অন্যদিকে জিডিপিতে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান ৩২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৭৮ লাখ এসএমই শিল্প রয়েছে।
এসব এসএমই শিল্প জিডিপিতে শতকরা ২৫ ভাগ এবং মোট শিল্পখাতে কর্মসংস্থানে শতকরা ৮০ ভাগ অবদান রাখছে। আর এসব ব্যবসার বেশিরভাগই হয় উৎসব কেন্দ্রিক। এ খাত সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা তাই বড়োই ব্যস্ত। এ প্রসঙ্গে হ্যান্ডটাচের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান বলেন, মান, গুণ ও দাম বিবেচনায় আমাদের পণ্যের চাহিদা ভালো।
বেচাবিক্রি ভালো হওয়ার কথা জানিয়ে মিথ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী পৃথ্বীলা শাহনেওয়াজ বলেন, উৎসব ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি ভালো। মূলত এই মৌসুমেই আমাদের সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়।
এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাজারের সংযোগ সহজ করতে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। এবিষয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, এ শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা মূলত উৎসব ঘিরেই সারা বছরের ব্যবসা করেন। কাজেই তারা কিভাবে কাজ করতে পারে এবং বাজারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরি করতে পারে, তা নিয়ে আমরা সারা বছর কাজ করি।
উৎসবের অর্থনীতির কলেবর বরাবরই অনেক বড়। উৎসবের কেনাবেচার ধারা অব্যাহত থাকুক, বড় হোক উৎসবের পরিসর, আর এগিয়ে চলুক বাংলাদেশ, এমন প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
এই বাংলা/এমপি