25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

আদালতের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ঈদগাহ মাঠের জমি দখল

আরও পড়ুন

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ঈদগাহ মাঠ এবং রেজিষ্ট্রেশনকৃত ক্লাবের নিজস্ব জমি জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে জমি দাতা পরিবারের বিরুদ্ধে।

শুধু তাই নয়, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসার নিজস্ব জমি কারখানাকে ভাড়া দিয়েছে।

সেই টাকা হেরফের করে আত্মসাৎ করাই হলো মূখ্য উদ্দেশ্য। এ কারণে জরাজীর্ণ একটি মাটির ঘরকে সংস্কার করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অপর দাতা পরিবারের সদস্যরা।

শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন, ওই গ্রামের প্রয়াত কলিমউদ্দিন চেয়ারম্যানের সন্তান আজিজুল হক সরকার। অপরজন তারই ভাতিজা কফিল উদ্দিন সরকার।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেই আদালতে একটি রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেছেন। তার মামলার ধারাবাহিকতায় আদালত সব ধরণের নির্মাণ ও সংস্কার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা থাকায় শ্রীপুর থানার এসআই আমিনুল ইসলাম (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অভিযুক্ত আজিজুল হককে সংস্কার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

আদালত ও থানা পুলিশের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেই অভিযুক্তরা সংস্কার কাজ অব্যাহত রেখেছে। এরপর দিন-ই সংস্কারকৃত ঘরকে একটি নাম দিয়ে মাদ্রাসা হিসেবে উদ্বোধন করেন।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আজিজুল হক সরকারের আপন ছোট ভাই আতাবুল হক সরকার বলেন, ‘তারা আইনের তোয়াক্কা করছে না।

মাঠের পাশেই পুরোনো একটি পরিত্যক্ত ঘর সংস্কার করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা চেষ্টার মাধ্যমে কৌশলে জমি জবরদখলের চেষ্টা করছে সে’।

দাতা পরিবারের সদস্য কামাল উদ্দিন সরকার এ বিষয়ে বলেন, ঈদগাহ মাঠে দান করা জমির উপর রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেছেন আজিজুল হক। আমি ওই মামলার বিবাদী।

মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই জমিতে নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও এখানে ধর্মকে পুঁজি করে দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে নই, নিষ্কণ্টক জমিতে মাদ্রাসা নির্মাণ হোক, এটাই প্রত্যাশা।

দাতা পরিবারের সদস্য হাজী হাবীবুর রহমান বলেন, আজিজুল হক মাদ্রাসার নিজস্ব জমি ভাড়া দিয়েছে এসএম এক্সোসরিজ নামক একটি কারখানার নিকট। সেখান থেকে প্রতি মাসে ৪৮ হাজার টাকা ভাড়া তোলা হচ্ছে।

সেই টাকার সঠিক কোনো হিসেব নেই। মসজিদের কমিটিতেও বাইরের কাউকে নেয়া হয়নি। তারা নিজেরাই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ার।

সোজা কথা ধর্মকে পুঁজি করে তারা সেটাকে বাণিজ্যে রুপান্তরিত করেছে। মাদ্রাসার জমি ভাড়া দিয়ে সেই টাকায় ঈদগাহ মাঠের পাশে থাকা জরাজীর্ণ ঘরকে মাদ্রাসা বানাতে চাচ্ছে।

এতেও তার আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য রয়েছে। ধর্ম নিয়ে তাদের এমন ব্যবসা বন্ধ করা জরুরি।

ক্লাবের জমি প্রসঙ্গে প্রফেসর এমদাদুল হক বলেন, এখানে সরকারি রেজিষ্ট্রেশনকৃত একটি ক্লাব ছিল। ওই ক্লাবের নাম ‘চলন্তিকা সংঘ’।

রেজিস্ট্রেশন নম্বর গা-০৪৫। ক্লাবটির নামে রেজিস্ট্রিকৃত ১ শতাংশ জমিও আজিজুল হক সরকার দখলের পায়তারা করছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি এবং ঈদগাহের নামে দানকৃত জমির সীমানা চিহ্নিত না করেই আজিজুল হক সরকার মাদ্রাসা সংস্কারের নামে কৌশলে জমি দখলের পায়তারা করছে।

যেহেতু আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাই এটা পুলিশের বন্ধ করা উচিত।

এলাকাবাসীর পক্ষে শুভ সরকার বলেন,
এই মাঠে আশেপাশের অনেক শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে এখানে। জরাজীর্ণ এ ঘরটাকে মাদ্রাসা করা হলে মাঠ সংকোচিত হবে।

খেলাধুলার অসুবিধা হবে। ঈদের সময় নামাজের সংকীর্ণতা দেখা দিবে।

প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে। ঝামেলা থাকলে সেটি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। তাই যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ফ্রেশ জমিতে করাই ভালো।

মাদ্রাসার নামে সেখানে কোনো জমি নেই, এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আজিজুল হক সরকার।

তিনি বলেন, মাদ্রাসার নামে সেখানে কোনো জমি না থাকলেও ওই ঘরে বহু আগে থেকে মক্তব ছিল, শুধু ঘরটা সংস্কার করেছি।

শ্রীপুর থানার এসআই তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে গিয়েছিলাম। উভয় পক্ষকে আদালতের নোটিশ দিযেছি।

আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানে কাজ করতে নিষেধ করেছি’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর