25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

উন্নয়নই পুঁজি নৌকার প্রার্থীর, প্রতিশ্রুতি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের

আরও পড়ুন

বিশেষ প্রতিনিধি ::

পাহাড়, নদী ও সাগর পরিবেষ্টিত  এক অফুরন্ত সম্ভাবনার জনপদ চট্টগ্রামের বাঁশখালী। সাগরের কোল বেষ্টিত বাঁশখালী একসময় অবহেলিত জনপদ হিসেবে পরিচিত পেলেও বর্তমান সরকারের সময়ে বাঁশখালী রুপান্তরিত হয়েছে উন্নত জনপদে। বর্তমান সরকারের গৃহীত বেশ কিছু উন্নয়ন প্রজেক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাঁশখালী  এখন উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে।

এই আসন থেকে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য  মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন। নির্বাচনী মাঠে আছেন জোটবদ্ধ জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। নানা সমীকরণে জাতীয়  নির্বাচনের হাওয়া বর্তমান সাংসদ মোস্তাফিজের দিকে। 

জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ,  রাস্তাসহ পর্যটন খাতে বাঁশখালীর অভাবনীয়  উন্নয়নে হয়েছে। এছাড়া অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন। এ আসনে নৌকা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। ‘

গেল দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাঁশখালী নিয়ে আমার অনবদ্য স্বপ্ন রয়েছে। আমার লক্ষ্য ছিলো এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখা, কতটুকু পেরেছি সেটি জনগণই মুল্যায়ন করবেন। বাঁশখালীর প্রধান সড়ককে চার লেনে উন্নতি করার পরিকল্পনা আছে। এবং সেটিকে  চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হবে। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার তরুনদেন বেকারত্ব হ্রাস ও তাদেরকে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলে  বিদেশ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। আমার পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস হতে উপকূলীয় এলাকা রক্ষা, বামের ছড়া ও ডানের ছড়ার উন্নয়ন করা। পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাঁশখালীতে ; সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত, বৈলগাঁও চা বাগানসহ পর্যটন শিল্প উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেবো। বাঁশখালীতে উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য, সবজি যথাযথ বিপণনে সামাজিক ব্যবসা সম্প্রসারণ করা হবে। গন্ডামারা-বড়ঘোনার এস আলম ইকোনোমিক জোন ছাড়াও পশ্চিম বাঁশখালীর বেড়িবাঁধ কেন্দ্রিক পরিকল্পিত শিল্পায়ন সম্ভব হলে বাঁশখালী চট্টগ্রামের সব উপজেলাকে ছাড়িয়ে যাবে৷ দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বাঁশখালীতে স্থাপন এবং বাঁশখালীর জনগণকে শতভাগ শিক্ষিত জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। সংসদ সদস্য  পরিচয় ছাপিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান  চৌধুরী পরিচিতি পেয়েছেন স্পষ্টভাষী তুমুল জনপ্রিয়  রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে। করোনা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা সামাজিক সমস্যায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁশখালীর  মানুষের কাছে অনন্য ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন তিনি। বাঁশখালীর  বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথায় এমন চিত্র উঠে এসেছে।

নতুন সংসদ সদস্যের কাছে ভোটারদের প্রত্যাশা কি?  এমন প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষক আবদুল আউয়াল বলেন,  মৎস্য শিল্পের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। খাটখালীতে পূর্ণাঙ্গ মৎস্য আহরণ কেন্দ্র স্থাপনে নজর দিলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতি পাবে।  বাঁশখালীর প্রাণ জলকদর খালের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও দুই পাড়ের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিকরণে পরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহন করতে হবে। ‘

খাতুনগন্জের ব্যবসায়ী রইসুল ইসলাম মনে করেন,  ‘ বাঁশখালীতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে পরিকল্পিত শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হলে পুরো এলাকার পরিবর্তন দৃশ্যমান হবে। বেকারত্ব দুর হবে। ‘ 

উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ব্যবহার করে মেরিন ড্রাইভওয়ে নির্মাণ ত্বরান্বিতকরণ করার কথাও বলেছেন ভোটারদের অনেকে। গৃহিনী নুরজাহান বলেন, বাঁশখালী কি ছিলো – কি হয়েছে ; সেটাই ভোটের মাঠে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে। ‘

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে স্বতন্ত্র পদে প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করছেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।

গেল সোমবার চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র আপিল শুনানিতে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আপিল শুনানিতে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়া ৩ প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের শফকত হোসাইন চাটগামী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আশীষ কুমার শীল।এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল্লাহ কবির লিটন। বিভিন্ন পর্যায়ের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাগে আনাটা তাঁদের দুজনের জন্যই কঠিন হয়ে পড়বে এমন বিশ্লেষণ ভোটারদের। বাঁশখালীতে নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এই আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৫ জন।

 

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর