গোপাল হালদার, পটুয়াখালী:::
বৃষ্টি এলেই বেহালদশায় পরিণত হয় পটুয়াখালীর বাস টার্মিনাল বর্তমানে খানাখান্দে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর কিছু সংস্কার করে কোনোরকম কাজ চালালেও এবার সেটিও করা হয়নি। এ কারণে মহাসড়কে বাস থামিয়ে এখন যাত্রী ওঠানামা করছে চালকরা।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে দুই একর জমির ওপর ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এ বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে। পরে তারা এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে এবং সেই থেকে পৌরসভা এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে।
বর্তমানে বাস রাখার স্থানগুলোতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে তাতে পানি জমে থাকছে। ফলে যাত্রীরা এখন আর বাসে উঠতে কিংবা নামতে টার্মিনালের মধ্যে ঢুকছেন না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
গলাচিপার যাত্রী রুপা আক্তার জানান, অনেক কস্ট করে কাদাপানি পাড় হয়ে টিকিট কাটতে হয়। অনেক সময় পাশ দিয়ে গাড়ি গেলে ময়লা পানিতে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও বাধ্য হয়ে টার্মিনালে প্রবেশ করতে হচ্ছে টিকিটের জন্য। আসলে এটা দ্রুত সংস্কার করা জরুরী।
কুয়াকাটায় ঘুড়তে আসা যাত্রী জহিরুল ইসলাম জানান, বাস টার্মিনালে কাদাপানি ও ছোট বড় গর্তের কারনে ভেতরে ঠুকতে সমস্যা হচ্ছে। যার কারনে ভেতরে প্রবেশ না করেই বাহির থেকে টিকিট কাটতে হচ্ছে। শহরের ভেতরের রাস্তাঘাট দেখতে খুব সুন্দর কিন্তুু মহাসড়কের পাশে এমন একটি বাসটার্মিনালের অবস্থা খুবই খারাপ।
একাধিক বাস মালিক জানান, প্রতিদিন তারা বাস টার্মিনালে প্রতি ট্রিপ বাবদ ৫০ টাকা করে পৌর টোল পরিশোধ করছেন। কিন্তু টার্মিনালে কোনো সুযোগ-সুবিধা তারা ভোগ করতে পারছেন না। এছাড়া গাড়ি নষ্ট হলে মেরামত করতে গিয়ে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গাড়ি রেখে তার নিচে ঢুকে শ্রমিকরা যে কাজ করবে তেমন কোনো পরিবেশ এখানে নেই। যাত্রীদের রাস্তায় নামিয়ে দিতে হয়। আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে হয়। যাত্রীদের জন্যও বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ।
পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন আরজু বলেন, যেসময় পটুয়াখালী বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয় সেসময়ই এর কিছু ত্রুটি ছিল। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে টার্মিনালের পানি অপসারণের জন্য কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ কারণে বৃষ্টির পানি পুরো টার্মিনালের পার্কিং এলাকায় জমে থাকছে এবং বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য এরইমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য নতুন করে আরও ছয় একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে যেসব সুযোগ সবিধা থাকে সেই মানের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
পাশাপাশি বাস মেরামত করার কারখানা, যাত্রী ও শ্রমিকসহ সবার জন্য পৃথক টয়লেট, শ্রমিকদের গোসল করার ব্যবস্থা, বিশ্রামের ব্যবস্থা, একটি তেলের পাম্প, ছোট যানের জন্য পার্কিং ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, প্রতি বছর আমরা বাস টার্মিনালের খানাখন্দগুলো মেরামতের জন্য কাজ করি। তবে এবার সেটা করা হয়নি। কারণ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নতুন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হবে। কোনো জটিলতা না থাকলে এ বছরের শেষ দিকেই নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু করার চেষ্টা করবো।
এইবাংলা /নাদিরা শিমু/NS