24.3 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

পরিত্যক্ত খালে ১২ মন মাছের পোনা অবমুক্ত করলো যুবলীগ নেতা শামীম সিকদার

আরও পড়ুন

গোপাল হালদার, পটুয়াখালীঃ

‘নিরাপদ মাছে ভরব দেশ, গড়ব স্মার্ট বাংলাদেশ’। এই শ্লোগানে নিজ উদ্যোগে পটুয়াখালীর আউলিয়াপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাদুড়া গ্রামের বাঁশবুনিয়া খালে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বিকেল উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন আউলিয়াপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম সিকদার। তার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

আউলিয়াপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম সিকদার বলেন, আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কালাই মেম্বারের বাড়ি থেকে আলতাফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত সরকারি খালে আমরা এলাকাবাসীর উদ্যোগে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এইখালে মাছ অবমুক্ত করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় খালপাড়ের ৬০ জন নিয়ে একেকটি দল ঘোষণা করে মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা মাছ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হই। এই খালের দুই পারে দরিদ্র কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালক নিম্নআয়ের মানুষরা বসবাস করে থাকে। তাদেরকে নিয়ে আমরা এই মাছ চাষ প্রকল্প করে আসছি। আর এই মাছ চাষের প্রকল্পের আমরা নাম দিয়েছি “প্রবীণ নবীন সম্মিলিত মৎস্য চাষ” এখানে দুইপারের ৫৩ টি পরিবারের সদস্যরা সংযুক্ত রয়েছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসীর তথ্য মতে, আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বাশবুনিয়া খালটি দুই পাড়ের হাজার হাজার পরিবার নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে এই খালে মাছ অবমুক্ত করে থাকেন। এই খালের মুদিরহাট বাজার থেকে আদম হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত মুদিরহাট মসজিদ কমিটি পরিচালনা করছেন। আবার আলী হাওলাদার বাড়ি থেকে রফিক হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত নাসির হাওলাদার চাষ‌ করেন আবার রফিক হাওলাদারের বাড়ি থেকে নয়া বাড়ি পর্যন্ত কামাল হাওলাদার। নয়া বাড়ি থেকে আলতাফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাকিব হাওলাদার। আলতাফ মাস্টারের বাড়ি থেকে কালাই মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত শামীম শিকদারের উদ্যোগে মাছ চাষ করা হচ্ছে। কালাই মেম্বারের বাড়ি থেকে সেলিম গাজী বাড়ি পর্যন্ত নজরুল ইসলাম গাজী আবার সেলিম গাজী বাড়ি থেকে রত্তন প্যাদা বাড়ি পর্যন্ত রিদয় হাওলাদার এবং রত্তন প্যাদার বাড়ি থেকে কাজিবাড়ি পর্যন্ত রাসেল হাওলাদার মাছ চাষ করছেন বলে জানা যায়।

প্রবীণ নবীন সম্মিলিত মৎস্য চাষের সদস্য রাসেল হাওলাদার বলেন, এই ঘেরে শামীম শিকদারের নেতৃত্বে মাছ চাষ করে আসছি, দুই পাড়ের প্রতিটি পরিবারের মানুষদের নিয়ে আমরা এই মাছ চাষ পরিচালনা করে আসছি। এবং সবাইকে বছর শেষে আমরা সুবিধা প্রদান করে থাকি। এতে করে তারা অনেক লাভবান হয়ে থাকেন।

উপকারভোগী হুমায়ূন কবির হাওলাদার বলেন, এইখানে আমরা আজকে ১২ মন মাছ ফেলেছি, এক বছর পরে আমরা মাছ ধরবো, দুই পাড়ের ৫৩ জন সদস্য আমরা উপকার ভোগ করব, এবং আমাদের ছেলে মেয়ে যারা আছে পড়াশোনায় এর দ্বারা অনেক উপকৃত হয়।

উপকারভোগী মোঃ মোরশেদা বেগম বলেন, এই মাছ চাষ করে আমরা খুবই ভালো আছি আগে অনেক কষ্টে ছিলাম। এখন খালের মাছ চাষ করার ফলে আমরা অনেক শান্তিতে ও ভালো আছি, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাতে পারছি। আমাদের আয় রোজগার ভালো হয়।

দক্ষিণ বাদুরা গ্রামের রিপন হাওলাদার বলেন, আমাদের এই ঘের কালাই মেম্বারের বাড়ি থেকে আলতাফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত। আমরা আজকে ১২ মন মাছ ফেলেছি। এর মধ্যে রুই,কাতলা ও ব্রিগেড সহ বিভিন্ন জাতের মাছ ফেলেছি। আমরা এই চাষ করে আমাদের ছেলে-মেয়ে সংসার বাজার করতে অনেক উপকৃত হই। আমি সবাইকে বলব সবাই যেন মাছ চাষ করেন।

শামিম সিকদার বলেন, এই খালে দীর্ঘ ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল আমরা এলাকাবাসীরা নিজেরা এই খালটির পরিষ্কার করি এবং মাছ চাষ শুরু করি এতে করে এই খালের পানি সবাই ব্যবহার করতে পারে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পেয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা পুরন করতে পারছে। রুই, কাতলা, মৃগেল, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১২ মন মাছের পোনা আজ আমরা এইখালে অবমক্ত করা হয়।

এইবাংলা/প্রিন্স আচার্য্য/সিপি

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর