::: বিশেষ প্রতিনিধি :::
রাজধানী ঢাকার মতিঝিল থেকে দুদক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকার মতিঝিল থেকে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একটি সূত্র। আটক গৌতম দুদকের মহাপরিচালক মোকাম্মেল হকের (মানিলন্ডারিং) ব্যক্তিগত সহকারী ( পিএ)।শুক্রবার সকালে মতিঝিলের একটি হোটেল থেকে গৌতম চক্রবর্তীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
গ্রেফতার করার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়। সেখানে গৌতম চক্রবর্তীসহ বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তারা তদবির শুরু করেন। কিন্তু গণমাধ্যম কর্মীরা জেনে যাবার কারণে সেই তদবির কাজে লাগেনি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে শুক্রবার রাতে বিষয়টি স্বীকার করে প্রেস ব্রিফিং এর ঘোষণা আসে।
সূত্র মতে, আশিকুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নিজেই দুদকে অভিযোগ দাখিল করে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামানের কাছ থেকে ঘুষ চেয়ে হয়রানি করে আসছিলেন গৌতম ও তার তিন সহযোগী । জানা যায়, দুদক কর্মকর্তাদের সই জাল করে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা, ঢাকার উত্তরার ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের একটি চিঠি তৈরি করে গৌতম ভট্টাচার্য তার কাছে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পুলিশের দ্বারস্থ হলে পুলিশ তাকে কৌশলে আটক করে। শুক্রবার সকালে মতিঝিলের একটি হোটেল থেকে গৌতমের বাকি সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।
হোটেলে টাকা নিতে এসে টাকাসহ চারজনকে গ্রেফতার করার বিষয়টি শুক্রবার রাতে স্বীকার করে পুলিশ। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-শনিবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করবেন। টাকাসহ দুদক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেফতারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। রাত সোয়া নয়টার দিকে মিডিয়া সেন্টার থেকে জানানো হয় আগামীকাল সকালে ( শনিবার) প্রেস ব্রিফিং করে এই বিষয়ে জানানো হবে।
তবে সুত্রমতে, গোয়েন্দা পুলিশের জালে তিন কোটি টাকাসহ ছয়জন ধরা পড়ে। তাদের তিনজন দুদকের কর্মচারী। এই তিনজনের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক( মানি লন্ডারিং) মোকাম্মেল হকে ব্যক্তিগত সহকারী গৌতম চক্রবর্তীর নাম নিশ্চিত হওয়া গেলেও বাকি দুই দুদক কর্মচারীর নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। এই বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও বিস্তারিত কোন কোন তথ্য মেলেনি।
পুলিশের সূত্রমতে, ডিএমপির লালবাগ জোনের ডিসির নির্দেশে গৌতমকে ভুয়া দরখাস্ত ( দুদকে দাখিল করা অভিযোগ) , টাকাসহ আটক করা হয়েছে। চক্রটিতে আরও দুইজন দুদক কর্মচারী রয়েছে।
গেল সপ্তাহে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থাকে এলাকা থেকে একই কায়দায় আরেক ব্যবসায়ীকে হয়রানি ও চাঁদা আদায়ের সময় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল দুদকের এক কনস্টেবল, গাড়ির ড্রাইভারকে। পরে শাস্তিমূলক বদলি করা হয় তাদের। এই ঘটনার পরে তাদেরকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক নাজমুসসাদাত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন চক্র প্রতারণা করছে। কমিশনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিতে নেমেছে সংস্থাটির ৩য়, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা । এসব চক্র বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ দাবি বা আদায় করছে, এমন অসংখ্য অভিযোগ পাচ্ছে কমিশন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুদকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারী, গাড়ির ড্রাইভার আটক হলো।