25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ঠেকাবে কে!

আরও পড়ুন

:: বিশেষ প্রতিনিধি :::

সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের বাকি মাত্র পাঁচদিন। শেষ মুহুর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সব মেয়র প্রার্থী। কাউন্সিলর প্রার্থীদের ঘরে ঘরে ভোট চাওয়ার দৃশ্য নির্বাচনকে ভোট উৎসবে পরিণত করেছে। মেয়র পদে দৃশ্যমান প্রতিযোগিতা ধরা হচ্ছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বাবুল ও নৌকার প্রার্থী আনোয়ারের মধ্যে। ইতিমধ্যে  সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে ইসলামি আন্দোলন।
তবে সাধারণ ভোটাররা আগামীর মেয়র হিসেবে তাদের পছন্দের প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন। কাউন্সিলর হিসেবে পছন্দের দ্বিধা থাকলেও মেয়র পদে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিকল্প নেই। সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেলে সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান দলীয় পরিচয় ছাপিয়ে অবস্থান তৈরি করেছেন সব শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে। সেই হিসেবে বাকি প্রার্থীদের ভরসা নিজেদের শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্নীয় স্বজন,  দলের ভোটব্যাংক।
সিলেটের মিরাবাজার ও উপশহরকে বিএনপির দূর্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেখানেই হানা দিয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান। বিএনপির কর্মী সমর্থকদের কাছেও ভিন্ন ইতিবাচক ইমেজ তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন আনোয়ার। মিরাবাজার এলাকার খাঁর পাড়া, সোনারপাড়া,  শিবগন্জ,  সোবহানিঘাট – এসব এলাকার অন্তত একশো ভোটার তাদের মতামত দিয়েছে প্রতিবেদকের কাছে। তাদের মতে আনোয়ারুজ্জামান তরুন প্রার্থী, তার প্রতিশ্রুতির অর্ধেক বাস্তবায়িত হলে সিলেটে দৃশ্যমান  পরিবর্তন আসবে।
তাদের ধারনা,  বাবুল ও আনোয়ার  দুইজনই প্রবাসী ; কিন্তু রাজনৈতিক ও নেতৃত্বের প্রজ্ঞা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে আলাদা করেছে অন্যসব প্রার্থীর কাছ থেকে।
এদিকে, নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল।  তিনি বলেন, ‘নানাভাবে আমাকে চাপের মধ্যে রাখা হচ্ছে। মাঠে থাকা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের চোখ রাঙানি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কর্মসূচিতে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। আড়াল থেকে নির্বাচনী মাঠে থাকা জাতীয় পার্টির নেতা–কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, তারা আমাদের গৃহবন্দী করে রাখতে চায়। ’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ গতানুগতিক অভিযোগের চেয়ে   নাগরিকদের ভাবনা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের ভালোবাসা আমাকে যুক্তরাজ্য থেকে টেনে এনেছে। তাই মানুষের ভোটেই জিততে চাই আমি। প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে নয়। মেয়রের চেয়ারের চেয়ে সিলেটবাসীর স্বপ্নপূরন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই জনসংযোগে ভোটের প্রচারণার চেয়ে  মানুষের আশা প্রত্যাশা, তাদের সমস্যার কথা শুনছি।    ‘
রিকশাচালকদের সাথে কথা হলো। তাদের সহজ উত্তর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী রে ঠেকাইবো কে !  সবার লগে মাতছইন,  কথা  কইরা , কথা হুনরা। এইবার মনে হয় সিলেটর সমস্যা দুর অইবো। বাবুল’র ঘরত, বাইরে সবহানেই ঝামেলা  ‘।
ভোটারদের কাছ থেকে জানা গেলো নির্বাচনে হাওয়া বাতাস কোনদিকে। অধিকাংশ ভোটার মনে করেন নৌকার প্রার্থী হিসেবে আনোয়ারুজ্জামানকে ভিশনারী মনে হচ্ছে। মনোনয়নের আগে যেভাবে তাকে নতুন প্রার্থী বলা হচ্ছিলো, বিপরীত চিত্র মানুষের কাছে৷
নৌকার প্রার্থীর সবচেয়ে ইতিবাচক দিক কোনটি এমন প্রশ্ন ছিলো সবার কাছে। আশি শতাংশের উত্তর ছিলো ‘ সিলেটের জন্য তার টান, ভালোবাসা। ‘
নজরুল ইসলাম বাবুল সম্পকে ভোটারদের ভাবনা তিনি জোয়ার তুলে হাওয়ায় পাস করতে চান। সিলেট নিয়ে তার ভাবনা কি,   সেটি একেবারিই গতানুগতিক।
চিকিৎসক পেশায় আছেন ডা: নাসিমা আলম শিল্পী। বসবাস খাঁর পাড়ায়। তিনি বলেন,  সমস্যা খোঁজে বের করা প্রতিশ্রুতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অন্য মেয়র প্রার্থীদের কাছে তেমন গুরুত্ব পায় নি সিলেটের সমস্যা,  যেভাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর কাছে পেয়েছে।’
নতুন মেয়রের কাছা সবার প্রত্যাশা  অনেকখানি একরকম।অধিকাংশ নাগরিক মনে করেন নাগরিক পরিসেবা ( কর, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রাফিক সিস্টেম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) আরও সহজ ও প্রযুক্তিনির্ভর হওয়া উচিত । মেয়রের সাথে নাগরিকদের যোগাযোগ সহজ হওয়া উচিত। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ভীড়ে সাধারণ মানুষ মেয়রের কাছে যেতেই পারেন না।  ‘
সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প নিয়েছে নিয়েছিলো সিটি করপোরেশন।  বিপুল ব্যয় করা হয়েছে, কিন্তু নগরবাসী তেমন সুফল পায়নি। তাই আগামী দিনে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তাদের জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যবসায়ী সাবেক বৃটিশ  কাউন্সিলর  এমএ রহিম সিআইপি বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে সরকার প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে কিন্তু মেলেনি সুফল। একরাতের বৃষ্টিতে ভাসছে সিলেট নগরী। শুধু সড়কে নয়, ঘরেও প্রবেশ করেছে পানি। এতে নগরবাসীর ভোগান্তির যেন শেষ নেই। গতকালও সকালে ঘুম থেকে উঠেই জলাবদ্ধতার সঙ্গে শুরু হয় মানুষের যুদ্ধ। মানুষ পরিবর্তন চায় সিলেটে।  ‘

এইবাংলা/ হিমেল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর