24.3 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আরও পড়ুন

::: তানভীর আহমেদ :::

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ উপার্জনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  সোমবার (৫ ই জুন) দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা জেলা কার্যালয় -১ এর সহকারী পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ মামলাটি দায়ের করেন। এরআগে গত ২৯ ই মে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক এই সচিব তার জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি উনত্রিশ  লাখ উনপঞ্চাশ হাজার আটশ টাকা (১,২৯,৪৯,৮১৬) ষোল টাকা মুল্যের  সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন । এছাড়া অবৈধ আয়ের মাধ্যমে উপার্জিত  ১ কোটি ৪০ লাখ চল্লিশ হাজার দুইশ সাতচল্লিশ(১,২৫৪০,২৪৭) টাকা মুল্যের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ ভোগ দখলে রেখেছেন তিনি। ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন আিনের ২৬(২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই সচিবের আয়কর নথি ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে ২ই ফেব্রুয়ারী দুদকের প্রধান কার্যালয়ে  জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতে তিনি অসত্য তথ্য জমা দেন। সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী তিনি তিন কোটি নিরানব্বই লাখ সতের হাজার তিনশ ছাপ্পান্ন টাকা মুল্যের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ উপার্জন করেছেন। এরমধ্যে পৈত্রিকসুত্রে প্রাপ্ত সম্পদ ব্যতীত জমি ও ফ্লাটসহ ২, ৮৫,২৯,৮১৬ টাকা মুল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রয় করেছেন। ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৭ হাজার পাঁচশ চল্লিশ টাকা মুল্যের  কার,আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স পণ্য ক্রয় করেছেন। সম্পদ বিবরণীতে  ১ কোটি বিশ লাখ উনপঞ্চাশ হাজার আটশ ষোল টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন সাবেক এই সচিব।

এর আগে  দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রশান্ত কুমারকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যবসা পরিচালনায় সরাসরি সম্পৃক্ত, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।অভিযোগ উঠেছে,  সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিজেকে ডেনিম পলিমার, ডেনিম এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তির কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা গ্রহণ করেন সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার।

প্রধানমন্ত্রী পল্লী অঞ্চলের প্রত্যেক বাড়িকে উৎপাদনমুখী খামারে রুপান্তরের জন্য ২০০৯ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প গ্রহণ করেন। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব ছিলেন প্রশান্ত  ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)। তিনি তার পদ ব্যবহার করে ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বিশেষ করে পিডি থাকা অবস্থায় তার অনিয়মের প্রমাণ পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।২০০৯-২০১৩ সাল মেয়াদী প্রকল্প পরবর্তীতে জুন, ২০১৬ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।প্রকল্পের অধীনে ৪০২১৫টি সমিতির মাধ্যমে সংগঠিত প্রায় ২২ লক্ষ পরিবারে সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধি, দারিদ্র দূরীকরণ এবং অন্যান্য কর্মসূচীতে দৃশ্যমান অগ্রগতি হওয়ায় প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পরিচালনার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যংক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নজিরবিহীন দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ ছিলো পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা দায়ের করেছে দুদক।

এইবাংলা /তুহিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর