টানা বৃষ্টিতে নীলফামারীতে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি

0
118
ছবি : এই বাংলা প্রতিনিধি

নীলফামারী প্রতিনিধি :


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় নীলফামারী জেলায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠের আধপাকা আমন ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে, অনেক ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে ঘরে তুলতে পারছেন না ফলন, দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকেরা।

দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নীলফামারীতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকাগুলো। এসব অঞ্চলের ধান হেলে পড়েছে ও অনেক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে, ফলে ধানের গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, জেলার কৃষকেরা আমন ধান কাটার পর ইতোমধ্যে ৫,৫৬৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির বীজ বপন করেছেন। উঁচু জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করা হচ্ছে, তবে অতিবৃষ্টিতে অনেক ক্ষেতেও পানি জমে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

রংপুর কৃষি অঞ্চলের আওতাধীন পাঁচটি জেলায় (যার মধ্যে নীলফামারী অন্তর্ভুক্ত) মোট ৪২,১৩০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮৯৩ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

ডিমলা উপজেলার কৃষক মো. আছাদুল হক বলেন, “ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। পানি না নামলে ফসল তোলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, “বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ হয়ে যেতে পারে। বাতাসে ধান পড়ে গেছে, ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ।”

শুধু ধান নয়, শীতকালীন সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ ও আলুর ক্ষেতেও ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেক জমিতে পানি জমে শিকড় নষ্ট হয়ে গাছ মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনজুর রহমান বলেন, “নিম্নচাপের কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এতে কিছু এলাকায় ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও নুয়ে পড়া ধানগাছ বেঁধে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে এলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।”

জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কার্যক্রমের জন্য প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এই বাংলা/এমএস

টপিক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here