Site icon দৈনিক এই বাংলা

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: কক্সবাজারে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’  আঘাত হানার প্রবল সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে  কক্সবাজারে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।  চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নং মহাবিপদসংকেত জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস। শনিবার (১৩ মে) দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানায়৷
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে পারে। আর আগামীকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে এটি কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমারের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

দেশের তিন বিভাগ—চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালে এ বৃষ্টি ঝরাবে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি ঝরাবে। আর বৃষ্টির কারণে দেশের পাঁচ জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।শনিবার সকাল ১০টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এটি ছিল ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল শুক্রবার রাত নয়টায় এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছিল। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ভোলা জেলা ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি এই দুই জেলার কাছাকাছি যেসব দ্বীপ ও চর রয়েছে, সেসব দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে রোববারের মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টির বার্তায় আতঙ্ক নেমেছে উপকূলে। ‘মোখা’ নামের এই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে উপকূলের ঝুঁকিতে থাকা লক্ষাধিক  মানুষ।বিগত বছরগুলোর দুর্যোগের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কক্সবাজারের  উপকূলবাসী।

শনিবার দিনের শুরু থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে উত্তাল রয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সৈকতের বালিয়াড়িতে দেওয়া হয়েছে লাল পতাকা। রোহিঙ্গাসহ উপকূলবর্তী লোকজনের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া, নগদ টাকা, খাবার মজুদ, মেডিকেল টিম ও উদ্ধারকর্মীসহ সহ সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

শনিবার বেলা বারোটার দিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আবহাওয়া চেঞ্জ হতে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে  আগামীকাল ভোরে মোখা আঘাত হানার কথা।  সম্ভাব্য ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১৮০-২০০ কিমি, সেই সাথে জলোচ্ছ্বাস।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝড়ের গতিপথ পরিবর্তিত নাহলে প্রথম আঘাত হানবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে। এরপর কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম। ১৮০/১৯০ কিমি: বাতাসের বেগের সাথে ১০/১৫ ফিট জলোচ্ছ্বাসের প্রচণ্ড ধাক্কা ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে বলছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

আঘাত হানার আশংকায়  উপকূলে ফিরেছে প্রায় ৩ হাজার মাছ ধরার ট্রলার। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব এখনো ঝড়-বৃষ্টি সৃষ্ট না হলেও চলছে দাবদাহ।ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরণের প্রস্তুতি।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কক্সবাজার সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার এবং মোংলা সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।আবহাওয়া বিভাগ বলছে, ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এইবাংলা /তুহিন

Exit mobile version