অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
কক্সবাজার: নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে পাওয়া রেশন সামগ্রী স্থানীয় দোকানে বিক্রি করছে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেছে। মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় এবং বিজিবির কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সৈকত পাড়া এলাকায় অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। সৈকত পাড়া মসজিদ সংলগ্ন আব্দুল্লাহ কলোনি নামে একটি ভাড়া বাসাতেও নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের বসবাস করতে দেখা যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাওয়া খাদ্যসামগ্রী এনে শহরের দোকানে বিক্রি করছে এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে। সৈকত পাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত অসামাজিক আচরণ ও নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।
সৈকত পাড়া সমাজ ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানান, তারা প্রায়ই এসব রোহিঙ্গাকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে দেখেন। আব্দুল্লাহ কলোনিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের কারণে পুরো এলাকা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কমিটির পক্ষ থেকে একাধিকবার কলোনির মালিক আব্দুল্লাহকে ভাড়াটিয়াদের বের করে দিতে বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। উল্টো তিনি দাবি করেন, তার ভাড়াটিয়ারা রোহিঙ্গা নয়।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই অবস্থা চলতে থাকলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। উখিয়া, টেকনাফ এবং পার্বত্য এলাকার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আরাকান বিদ্রোহীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু রোহিঙ্গা দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন স্থানে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটি সশস্ত্র চক্রও সক্রিয় রয়েছে যারা দখল ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
তথ্যমতে, পাহাড়তলী এলাকার নুতন বাজার, জিয়া নগর, বাদশাঘোনা, মৌলবী পাড়া, ফাতের ঘোনা, সৈকত পাড়া, আব্দুল্লাহর ঘোনা, ইসলামপুর, অল্লা ঘোনা, আবু উকিলের ঘোনা, শাহ নূর পাড়া, বাচা মিয়ার ঘোনা, আদর্শ গ্রাম, টেকনাফ পাহাড় এলাকা, হালিমা পাড়া, নুরু সওদাগরের ঘোনা, সত্তর ঘোনা, সিরাজের ঘোনা, নজির হোসেনের ঘোনা, পল্লাইন্য কাটা, সমিতি ঘোনা এলাকায় প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, তারা সব রোহিঙ্গাকে বালুখালীতে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।