Site icon দৈনিক এই বাংলা

ত্রিভুজ প্রেমের কারণে ডাঃ আমিরুল ইসলাম খুন হয়েছেন -প্রেস ব্রিফিং এ নাটোরের পুলিশ সুপার

আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি ::

নাটোরের বিএমএ ও বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক মালিক এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ এ এইচ এম আমিরুল ইসলাম ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই নিজের ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলাম মিয়ার (২৬) হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন। শহরের মাদ্রাসা মোড়ে নিজ প্রতিষ্ঠান জনসেবা হাসপাতালের একজন সেবিকার প্রেমে পড়েন ডাঃ এ এইচ এম আমিরুল ইসলাম। এর আগে থেকেই এই সেবিকা ডাক্তারের ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলাম মিয়ার সাথে ঘনিষ্ট প্রেমে জড়িত ছিলেন। এর জের ধরেই এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

বিষয়গুলো নিশ্চিত করে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নিহত চিকিৎসকের জনসেবা হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় পুলিশ সুপার বলেছেন, ত্রিভুজ প্রেমের বিষয়টি জানাজান হওয়ায় গত ২৫ আগষ্ট নিজের শয়ন কক্ষে ডাঃ আমিরুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলাম ও সেই সেবিকাকে মারপিট করেন। পরে সেদিনই ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলামকে চাকুরীচুত্য করেন।

বগুড়া জেলার ধনুট উপজেলার এলাচ ফকিরপাড়ার ইলিয়াস আকন্দের ছেলে আসাদুল ইসলাম সেদিনই নিজের বাড়ি চলে যান। পরে আসাদুল ইসলাম বগুড়া থেকে একটি কালো বোরখা ও দুটি ধারালো ছুরি কিনেন। নিজের কাছে চাবি থাকার সুবাদে ঘটনার রাতে পূর্ব থেকেই সে চিকিৎসকের শয়ন কক্ষে গোপনে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। নিজের প্রেমিকার সাথে ডাঃ আমিরুল ইসলাম অবৈধ সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়া এবং সেটা জানাজানি হওয়ার পর আসাদুলকে তাড়িয়ে দেয়ার ক্ষোভ থেকেই পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে আসাদুল স্বীকার করেছেন। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিবে বলেও পুলিশকে নিশ্চিত করেছেন সে। পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া উপজেলার শেরকোল নিঙ্গইন আইসিটি পার্ক এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে। আসাদুলের ব্যবহৃত বোরখাটি সিংড়ার আত্রাই নদীতে ফেলে দেয়ায় এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের অভিযান অব্যহৃত রয়েছে।

প্রেস ব্রিফিং এ নাটোরের পিবিআই পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) ইফতে খায়ের আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মাহমুদা শারমিন নেলি উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মঙ্গলবার আছরের নামাজের পর নাটোর পৌরসভার ঈদগাহ মাঠে জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় গাড়ীখানা কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। জানাজার নামাজে বিএনপির কেন্দ্রীয় নিবার্হী পরিষদের সদস্য সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক রহিম নেওয়াজ ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। অপর দিকে সোমবার রাতেই নিহত চিকিৎসক ডাঃ এ এইচ এম আমিরুল ইসলামের সহধর্মীনি তাসমিন সুলতানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে তার স্বামীকে হত্যা অভিয়োগে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনার পরপরই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের তিন সেবিকাসহ ৫জনকে আটক করে। পরে এক পর্যায়ে নাটোর শহর থেকে মূল অভিযুক্ত নিহত চিকিৎসকের ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলামকেও আটক করে। পুলিশ সুপার জানান, আপাতত এই মামলায় একমাত্র আসাদুল ইসলামকেই গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।

Exit mobile version