উমর ফারুক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি::
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৪ নং কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়-বন্দরপাড়া এলাকার একটি সুইজগেট ধ্বসে পড়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে ব্রীজের দুইপাশের মাটি সরে গিয়ে সংযোগ সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
মৌসূমের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে পঞ্চগড়ে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। একটি বেসরকারি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত পঞ্চগড়ে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। হঠাৎ অতিভারী বৃষ্টির কারণে পানির চাপে ভেঙ্গে পড়েছে রাস্তা, ব্রীজ, ও মসজিদ।
বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া গ্রামে দেখা গেছে মঙ্গলবার রাতের অতিভারী বৃষ্টির পানিতে স্থানীয়দের চাঁদায় তৈরী করা একটি রাস্তা ও একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদ ভেঙ্গে গেছে। মাটি ধ্বসে উপড়ে গেছে গাছ। অনেক স্থানে নতুন করে ফাটল ধরেছে। ঝুঁকি নিয়ে ওই এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়ির লোকজন চলাচল করছে।
বলেয়াপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য বরাদ্দ দিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে ছোট একটি দেয়াল নির্মান করা হয়েছিল। আমরা ওই এলাকার মানুষদের কাছে আর্থিক সহায়তা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্মান করা দেয়ালের উপরে আরো ইট গেঁথে এবং নতুন করে আরও দেয়াল নির্মান করে দিয়েছিলাম।
চলাচলের জন্য বন্ধ হয়ে থাকা রাস্তাটিতে মাটি ফেলে মানুষ ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেছিলাম। ওয়াক্তিয়া মসজিদ বাঁচাতে দেয়াল নির্মাণসহ স্থানীয়ভাবে একটি রিং কার্লভার্টও তৈরী করেছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টির পানির তোড়ে ভেসে গেছে রাস্তা। ওয়াক্তিয়া মসজিদটিও ভেঙ্গে পড়েছে। এখানে একটি বড় ড্রেন নির্মান করা হলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, পঞ্চগড় পৌরসভাসহ আশপাশের শিংপাড়া, ভাবরঙ্গী, গোফাপাড়া, বলেয়াপাড়াসহ বিস্তৃর্ণ এলাকার বৃষ্টির পানি এই দিক দিয়ে যায়। সে কারণে এখানে পানির চাপ অনেক বেশি। গত বছর বর্ষার সময় একটি ব্রীজ ভেঙ্গে দিয়ে মানুষসহ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি কাঠের সাকো নির্মান করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। পরে এলজিইডি সেখানে একটি বক্স কার্লভার্ট নির্মান করে।
এছাড়া ব্রীজের উজানে ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা রক্ষার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কাবিখার বরাদ্দে একটি গাইড ওয়াল নির্মান করা হয়। মঙ্গলবার রাতে অতিবৃষ্টির পানির তোড়ে সেই গাইড ওয়ালের পাশের রাস্তা ধ্বসে যানবাহন ও মানুষ চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। সেই সাথে একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদও ভেঙ্গে পড়েছে।
বিষয়টি আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে অতিবৃষ্টিতে এই উপজেলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ সুইজগেট আমি নিজে দেখতে গিয়েছিলাম। আর বলেয়াপাড়ার ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ও ওয়াক্তিয়া মসজিদ সরজমিন দেখার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাস্তব অবস্থা দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে কিভাবে সেখানকার সমস্যা সমাধান করা যায় সেই চেস্টা করা হবে।