Site icon দৈনিক এই বাংলা

অযত্নে হারিয়ে যাচ্ছে ফটিক হাওলাদারের বাড়ি

সানাউল্লাহ রেজা শাদ, বরগুনা:

বরগুনার আমতলী উপজেলার প্রত্যন্ত গোপখালী গ্রামে প্রায় দেড়শ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে ফটিক হাওলাদারের জমিদার বাড়ি। সবুজ গাছপালায় ঘেরা প্রাসাদোপম এই ভবনটি যেন নীরবে বলে যায় চন্দ্রদ্বীপের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও গৌরবের গল্প।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পটুয়াখালীর বাউফল থেকে এসে ছরু হাওলাদার এ অঞ্চলে বসতি গড়েন। তাঁর ছেলে ফটিক হাওলাদার কলকাতা থেকে আনা নির্মাণশ্রমিক দিয়ে চুন, সুরকি, সেগুন কাঠ ও লোহার পাত ব্যবহার করে দশ বছরে নির্মাণ করেন এ বাড়ি। প্রায় ২০টি কক্ষ, খাজনা আদায়ের কাছারি ঘর—সব মিলিয়ে এক বিশাল স্থাপনা।

স্থানীয়দের কাছে এটি ‘জমিদার বাড়ি’ নামে পরিচিত। ফটিক হাওলাদারের নাতি মুশফিকুর রহমান টুটু জানান, একসময় এখানে উৎসব, অতিথি আপ্যায়ন ও খেলাধুলায় মুখর থাকত চারদিক। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে তৃতীয় তলা ধসে পড়ে, আর জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর আর্থিক সংকটে পড়ে বাড়িটি আজ ভগ্নদশায়।

বাড়িকে ঘিরে রয়েছে নানা গল্প—গুপ্তধনের গুজব, অলৌকিক দৃশ্য দেখার দাবি, এমনকি ছাদে বড় আকৃতির মানুষ টাকা ছড়ানোর কাহিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। প্রশাসনের উচিত এটিকে প্রত্নসম্পদ ঘোষণা করে সংরক্ষণ করা।” জেলা প্রশাসক শফিউল আলম জানান, ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফটিক হাওলাদারের বাড়ি সংরক্ষণ করা গেলে বরগুনার পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। এখনই উদ্যোগ না নিলে হারিয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনা ও তার অমূল্য স্মৃতি।

Exit mobile version