Site icon দৈনিক এই বাংলা

ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে ১৬ সদস্য বহিষ্কার: সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের জন্ম

সানাউল্লাহ রেজা শাদ (ঝালকাঠি)

ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে একযোগে ১৬ জন সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখের সভার আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় ১৫ জুন সমিতির সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।

বহিষ্কৃত ১৬ সদস্য হলেন—
মো. মনজুর হোসেন, মো. আবদুল মান্নান রসুল, তপন কুমার রায় চৌধুরী, এম আলম খান কামাল, খান সাইফুল্লাহ পনির, মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, জি কে মোস্তাফিজুর রহমান, আ. স. ম. মোস্তাফিজুর রহমান (মনু), সঞ্জয় কুমার মিত্র, মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মো. মোর্শেদ কামাল তালুকদার, কার্তিক চন্দ্র দত্ত, সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর শামীম, তানজিলা হক, মো. আবুল বাশার এবং এস এম রুহুল আমিন রিজভী।

বহিষ্কৃত প্রত্যেক সদস্যকে পৃথক চিঠির মাধ্যমে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমিতির ভেতরে বিরোধ দেখা দিয়েছে। সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান জানান, “কার্যনির্বাহী সভায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি যে, একযোগে ১৬ জনকে বহিষ্কার করা হবে। আলোচনা হয়েছিল তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সাধারণ সভার মাধ্যমে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত ছিল।”

তিনি অভিযোগ করেন, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো সদস্যকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিধান থাকলেও বহিষ্কৃতদের কাউকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি বহিষ্কার কতদিনের জন্য— সে বিষয়েও বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ নেই।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান বলেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্তে উঠে আসে— বিগত সরকারের শাসনামলে সমিতির সদস্যদের মধ্যে অনেকে দমনমূলক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন বা সহযোগিতা করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “তালিকাভুক্তদের অনেকেই নিয়মিত বার চাঁদা পরিশোধ করেন না এবং পেশাগত কাজেও অনিয়মিত। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

এই বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতির ভেতরে বিভাজন ও প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ এ সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত করেছে। এখন দেখার বিষয়, বহিষ্কৃত সদস্যরা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি বা প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন কিনা।

 

Exit mobile version