Site icon দৈনিক এই বাংলা

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল

সানাউল্লাহ রেজা শাদ বরগুনা

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের নগণ্য হলেও উন্নত দোষ গুলোর কার্বন নিশ্চারনের খেসারত দিতে হচ্ছে এদেশের মানুষেরও। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি সহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশে।

তীব্র তাপদাহ ,অতিবৃষ্টি ,অনাবৃষ্টি বারবার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের হানা সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি। জলচ্ছাসের পাশাপাশি লবণাক্ততা বেড়েছে উপকূলের কৃষি জমিতে।

পানিতেই লবনাক্ততার মাত্রা ৬০০ পিপিএম হলেও বরগুনার পাথরঘাটা এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানিতে লবণের মাত্রা‌ ৩০০০ পিপিএম। চারিদিকে অফুরান উৎস থাকলেও সুপেয় পানির হাহাকার জনপদ জুড়ে। কোথাও সংকট এতই তীব্র যে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা রাখতে হয় পাহারা দিয়ে।

এদিকে জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে বসত বাড়ি। আটকে দেওয়া হচ্ছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। ফলে গেল দশকে স্বাভাবিক জোয়ারের উচ্চতা বেড়েছে কয়েকগুণ। প্লাস্টিক বর্জ্যে পানি দূষণের পাশাপাশি শিকার জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলের রক্ষাকবচ গাছ কিন্তু বেশির ভাগই জ্বালানি হিসেবে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায় । এতে বাতাসে বাড়ছে কার্বন আর এসিড বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। বিভিন্ন কারণে কর্মসংস্থান হারিয়েছে উপকূলের অনেক পরিবার‌। কাজের সন্ধানে ছাড়ছেন নিজের ঘর বাড়ি।

জলবায়ু পরিবর্তন ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বালু উত্তোলন করায় ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বরগুনা শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত । এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে সমুদ্র সৈকতের এক তৃতীয় অংশ ।

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে উপকূলীয় বন ভূমির উপর । ঘনত্ব কমেছে সুন্দরবনের আন্তর্জাতিক গবেষকদের তথ্য মতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ১৮.৩ অংশ তলিয়ে যেতে পারে সমুদ্রে।

ঋতু বৈচিত্রের এই পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সব থেকে বেশি পড়েছে কৃষিতে। ২০২৩ সালেই অসময় শিলা ভারী বৃষ্টির কারণে বরগুনায় নষ্ট হয়েছে কোটি কোটি টাকার তরমুজ। এমন ক্ষতির মুখে প্রতিবছরই পড়ছে কৃষকরা।

পরিবেশ দূষণ হ্রাস ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে ক্ষতিপূরণের দাবি আদায়ে সম্মিলিত ভূমিকা পালনের আহ্বান উপকূল জুড়ে স্থানীয় সচেতন মহলের।

জলবায়ুর এই পরিবর্তন অব্যাহত থাকলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপকূলীয় কৃষি উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাহত হবে আর্থসামাজিক উন্নয়ন।

Exit mobile version