Site icon দৈনিক এই বাংলা

কৃষি কর্মকর্তার গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত চলছে

জকিগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা::

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবু হানিফের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি সহ নানান অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষন অফিসার দিপক কুমার দাস তদন্ত শুরু করেছেন।

জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে আবু হানিফের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে জকিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মাইজকান্দি গ্রামের সুলতান আহমদ, সাদেক আহমদ, আরিফ আহমদ, কসকনকপুর ইউনিয়নের উত্তরবাগ গ্রামের মেহেদী হাসান কামরান, মিলাদ আহমদ, উপজেলা ভূমি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ হুমায়ুন আহমদ, কেচরী গ্রামের কাওছার ইসলাম। ওই অভিযোগের পর তদন্ত শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রয়েছেন হানিফ।

ভুক্তভোগী কাওছার আহমদ বলেন, প্রায় দুই বছর আগে কৃষি কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবু হানিফ আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১লক্ষ ৭০হাজার টাকা নিয়েছিলেন। চাকরি দিতে না পারায় আমার টাকা ফেরত দিয়ে দিছেন তিনি। এদিকে ভূমি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হুমায়ুন আহমদের অগোচরে মেসের আসবাবপত্র লুটপাট করে বিক্রির অভিযোগ করেন হুমায়ুন।

বাকি ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদেরকে কৃষি সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলে ১৫ হাজার টাকা করে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তার গাড়ি চালক হানিফ। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত আমাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। তাকে বহাল তবিয়তে রেখে তদন্তের নামে চলছে গড়িমসি। এদিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ও কৃষি অফিসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, কৃষি কর্মকর্তার গাড়ি চালক দাফতরিক কর্মকর্তা সেজে অনিয়ম-দুর্নীতর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করে সাধারণ লোকজনকে হয়রানি করছে। অফিসে কেউ সেবা নিতে আসলে কাজ করে দেওয়ার কথা বলে হানিফ বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। তার অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় উপজেলার ভূমি অফিসের নৈশ্ব প্রহরীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। আরো বলেন, কয়েকদিন পূর্বে অফিসের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিলারার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে হানিফ। পরে স্ত্রীকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে তালাক প্রদান করে দেনমোহর ছাড়া বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এতে উপজেলার সর্বোচ্চ মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। তার একের পর এক কর্মকান্ডে চরম বিব্রতবোধ করছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার অভিযোগ স্বীকার করে হানিফ বলেন, আত্মীয়তার সুবাদে চাকরি দেওয়ার জন্য কাওছারের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছিলাম তা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। একটি কু-চক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। এদিকে হানিফের স্ত্রী দিলারা বেগম কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন বিয়ের পর আমাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে চাকরীচ্যুত করা হয়।

জকিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল মুমিন বলেন, নারী কেলেঙ্কারির বিষয়টি আমার যোগদানের পূর্বে ঘটেছে। প্রতারণার বা আত্মসাতের অভিযোগের কিছু তথ্য প্রমান হাতে এসেছে তা দেখে ড্রাইভার হানিফের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে লিখিত নোটিশ করা হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version