Site icon দৈনিক এই বাংলা

সাংগ্রাইয়ের রঙে রাঙা রাঙামাটি, বৈসাবির পর্দা নামলো উৎসবমুখর পরিবেশে

মো. সোহরাওয়ার্দী সাব্বির, রাঙামাটি:::

রাঙামাটি পাহাড়ি অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব বৈসাবির শেষ অধ্যায়টি অনুষ্ঠিত হলো মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসবের মধ্য দিয়ে। পুরাতন বছরের বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এই আনন্দঘন আয়োজনে শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাঙামাটি জেলা যেন পরিণত হয়েছিল এক টুকরো রঙিন মিলনমেলায়।

সকাল থেকে পাহাড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ জমায়েত হন রাঙামাটি মারি স্টেডিয়ামে। বেলা ১২টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা সু-প্রদীপ চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল কান্তি তালুকদার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহসহ স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা।

সাংগ্রাইয়ের মূল আকর্ষণ ছিল ঐতিহ্যবাহী জলকেলি—যেখানে তরুণ-তরুণীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের ওপর পানি ছিটিয়ে পুরাতন গ্লানি ধুয়ে নতুন বছরের নতুন সূচনার বার্তা ছড়িয়ে দেন। প্রাণবন্ত এই জলকেলি দৃশ্য শুধু অংশগ্রহণকারীদের নয়, দর্শনার্থীদের মাঝেও ছড়িয়ে দেয় আনন্দের ঢেউ।

এর পাশাপাশি ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মারমা তরুণ-তরুণীরা নিজস্ব সংস্কৃতির গান ও নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন পাহাড়ি জীবনের রঙ ও বৈচিত্র্য। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে শিল্পীরা নাচে-গানে মাতিয়ে রাখেন পুরো স্টেডিয়াম।

যদিও শনিবারের আনুষ্ঠানিক আয়োজনের মাধ্যমে বৈসাবির মূল কর্মসূচি শেষ হয়েছে, তবে উৎসবের আমেজ এখনই শেষ হচ্ছে না। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে পক্ষকালব্যাপী চলবে উৎসবের নানা আয়োজন।

বৈসাবি শুধু একটি উৎসব নয়, এটি পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর ঐক্য, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা আবারও প্রমাণ করলেন—বৈচিত্র্যই এই পার্বত্য জনপদের সবচেয়ে বড় শক্তি।

Exit mobile version