Site icon দৈনিক এই বাংলা

পঞ্চগড়ে ২ জন ভুয়া পুলিশ আটক

উমর ফারুক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:::

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ভুয়া পুলিশ সন্দেহে মোঃ আজগর আলী(৩৯), ও মোঃ হানিফ(২৯) নামের দুজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর  কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।

রবিবার  (১৩ এপ্রিল ) রাত ৮ টার  দিকে বোদা উপজেলার সাকোয়া হাই স্কুল মাঠে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয় । বিষয়টি বোদা থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন। মোঃ আজগর আলী, বোদা উপজেলার ,ঝলঝলী (রামপ্রসাদ কাজীপাড়া) গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেন ছেলে  এবং মোঃ হানিফ রামপ্রসাদ কাজীপাড়া(আলিম বাজার) এলাকার আঃ রহমানের ছেলে।  স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ইং ১৩/০৪/২০২৫ তারিখ রাত অনুমান ০৮.২৫ ঘটিকার সময় গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী মোঃ আজগর আলী মোবাইল নং ০১৩৪১২৮৬৪৭৫, ০১৭৩৯৯৬১৪৩৬ নম্বর থেকে বাদীর মোবাইল নং-০১৭৪৭০১২৩২৮ তে বারবার ফোন করে জরুরী প্রয়োজনের কথা বলে সাকোয়া হাইস্কুল মাঠে আসতে বলে। গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী মোঃ আজগর আলী(৩৯) বার বার ফোন করায় বাদী রাত অনুমান ৯.১৫ ঘটিকার সময় বোদা থানার ৯নং সাকোয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাকোয়া হাইস্কুল মাঠের আসে।

স্কুলের উত্তর পাশের্^র বাউন্ডারী দেয়ালের নিকট অজ্ঞাতনামা একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার দাড়িয়ে থাকতে দেখেন। ঐ প্রাইভেটকার থেকে গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী আজগর আলী নেমে আসে এবং বাদীকে প্রাইভেটকারের নিকটে নিয়ে যায়। প্রাইভেটকারের ভিতরে গ্রেফতারকৃত ২নং আসামী আসামী হানিফ, ৩নং পলাতক আসামী আরিফুল ও ৪নং পলাতক আসামী শাহীনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন ছিল। গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী আজগর আলী অপর ৪নং পলাতক আসামী শাহীনকে স্যার বলে সম্বোধন করলে আসামী শাহীন প্রাইভেটকার থেকে বের হয়ে নিজেকে এসআই শাহীন পরিচয় দিয়ে আমাকে বলে যে, বাদীর নামে চোরাইমাল ক্রয়ের মামলা আছে। আসামী শাহিন বাদীকে একটি কাগজ দেখিয়ে বলে যে, আমি ঐ মামলার আসামী। বাদী মামলার কাগজ চাইলে তিনি বাদীকে কাগজ না দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। ঐ সময়ে প্রাইভেটকারের ভিতরে থাকা আসামীরা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আসামী শাহীন বাদীর কাছ থেকে ৩,৫০,০০০/-(তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা দাবী করে এবং বলে যে, মামলা থেকে রেহাই পেতে হলে দাবিকৃত  টাকা তাকে দিতে হবে। গ্রেফতারকৃত আসামী আজগর আলী, হানিফ ও পলাতক আসামী আরিফুল’গণ বাদীকে আসামী শাহীনের দাবীকৃত ৩,৫০,০০০/-টাকা দেয়ার জন্য চাপাচাপি করতে থাকে। বলে যে, টাকা দিলে গ্রেফতার করবে না। অন্যথায় বাদীকে গ্রেফতার করে বোদা থানায় নিয়ে যাবে। বাদী টাকা দিতে রাজী না হলে প্রাইভেটকার থেকে অপর আসামীরা নেমে আসে এবং গ্রেফতারকৃত আসামী আজগর আলী, হানিফ ও পলাতক আসামী আরিফুল, শাহিনসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাদীকে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠানোর চেষ্টা করে। বাদী প্রাইভেটকারে উঠতে না চাইলে আসামীরা বাদীকে এলোপাথারী মারপিট শুরু করে। গ্রেফতারকৃত আসামী হানিফ সামনে থেকে বাদীর হাতের আঙ্গুলগুলো মোচড়াইয়া ধরে এবং আসামী আজগর আলী পিছন দিক থেকে বাদীর গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ  করে হত্যার চেষ্টা করে এবং বলে যে, প্রাইভেটকারে না উঠলে বাদীকে প্রাণে মেরে ফেলবে। তখন বাদী তাদেরকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে বলে যে, টাকার জন্য একজনকে ফোন দিতে হবে। গ্রেফতারকৃত আসামী আজগর আলী বাদীকে ফোন করার সুযোগ দিলে বাদী তাহার আত্মীয় মিনাল রহমানকে ফোন করে হাইস্কুল মাঠে আসতে বলে। ফোন করার সময় আসামীরা বলাবলি করে যে, সময় দেয়া যাবে না। এই কথা বলেই আসামীরা সংঘবদ্ধভাবে বাদীকে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করে গাড়ি স্টার্ট করে যাইতে থাকলে বাদী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি এবং প্রানপণ চেষ্টা করে প্রাইভেটকারের দরজায় ধাক্কা দিলে গাড়ি থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যাই এবং চিৎকার দেই। তখন গ্রেফতারকৃত আসামী আজগর আলী ও হানিফ বাদীকে পুনরায় প্রাইভেটকারে উঠানোর চেষ্টা করে। বাদীর ডাক-চিৎকার শুনে সাকোয়া হাইস্কুল মাঠের দক্ষিণ পাশের্^ থাকা লোকজন এবং সাকোয়া বাজার হতে লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে আসতে থাকলে আসামী শাহিন, আরিফুল ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামী প্রাইভেটকারে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত প্রাইভেটকার চালিয়ে সাকোয়া বাজারের দিকে চলে যায়। আসামী আজগর আলী ও হানিফ প্রাইভেটকারে উঠতে না পেরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। বাদীর ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন আসামী আজগর আলী ও হানিফ’দ্বয়কে হাতে নাতে আটক করে। আটক করার সময় উত্তেজিত লোকজন তাদেরকে সামান্য মারপিট করে। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে কেহ বোদা থানাধীন সেনা ক্যাম্পে ফোন দিলে সেনাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটক আসামী’দ্বয়কে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে হেফাজতে গ্রহন করে। সংবাদ পেয়ে বোদা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ে হেফাজত হতে আসামীদের  প্রতারণা ও অপরাধমূক কাজে ব্যবহৃত ২টি বাটন মোবাইল ফোন ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সাদা কাগজে লিখিত কথিত এজাহার কপি জব্দ করেন। গ্রেফতারকৃত ০১নং আসামীর বিরুদ্ধে সূত্রে বর্নিত মামলা সহ সর্বমোট-০৭টি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

Exit mobile version