মোহাম্মদ মোশার্রাফ হোছাইন খান: এস. আলম গ্রুপ কেন্দ্রিক ব্যাপক অনিয়ম – লুটপাটে জড়িত এমডি মনিরুল মাওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ শরীয়া ভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংক ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির বাংলাদেশ ব্যাংক নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদ। এ গ্রুপের স্বার্থ রক্ষার্থে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে দেশের প্রথম শরীয়া ভিত্তিক ও সর্ব বৃহত্তর বেসরকারি এই ব্যাংকটির এমডি পদে পদোন্নতি দেয়া হয় মনিরুল মাওলাকে।
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি মনিরুল মাওলা ব্যাংকটির এমডি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত চার বছরে তিনি বিনিয়োগ করেন মোট ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এককভাবে এমডি কর্তৃক এই ঋণ বিতরণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে উনিশ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, এই ঋণগুলো বাই মুরাবাহা প্লেজ মুডে এস. আলম গ্রুপে বিতরণ হয়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, বিশাল অঙ্কের এ টাকা বিতরণে ব্যাংকিং বিধি এবং শরীয়ার কোন বিধি বিধান পরিপালন করা হয় নি।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় অর্জন ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।একদল নিবেদিত কর্মীর অক্লান্ত চেষ্টা – সাধনায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির ছিল দেশে-বিদেশে একটি অনুকরণীয় আদর্শ। জানা যায়, বিশ্বের কোন দেশে নতুন কোন ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হতো বাংলাদেশের এই শরীয়া ভিত্তিক ব্যাংকটিকে। এমনও জানা যায় নব্বই দশকের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নতুন করে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংক সমূহকে এই ব্যাংকটি পলিসি এবং দক্ষ জনবল দিয়ে সাহায্য করেছে। এতে আর্থিক খাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে। ব্যাংকটির একদল ভিশনারী আদর্শিক কর্মী এবং দ্রুত অগ্রগতি সংঘবদ্ধ একটি দুষ্ট চক্রের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার মতো চরম ইসলাম বিদ্বেষী বাংলাদেশে ক্ষমতাশীন হলে ২০১২ সালের দিকে কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা নেয়া হয় ব্যাংকটির অগ্রযাত্রা ও সাফল্য কীভাবে নস্যাৎ বা ধ্বংস করা যায়।
তৎকালীন ইফার ডিজি হাসিনার ছোটভাই খ্যাত সামিম মোহাম্মদ আফজালকে এ কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়। সামিম মোহাম্মদ আফজাল শেখ হাসিনার দেয়া কর্মসূচি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ মদদে সুচারুভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নেন। ২০১৯ সালে এ পরিকল্পনা চুড়ান্ত বাস্তবায়িত হয়। বাংলাদেশের তথা বিশ্ব অর্থনৈতিক খাতের সর্ববৃহৎ ও অভিনব কেলেঙ্কারির ঘটনা শুরু হয়। এ কেলেঙ্কারির পুরোটাই সংঘটিত হয় ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে কেন্দ্র করে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, এ ব্যাংকটিকে বিশ্বের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামী ব্যাংক মিট ঘামারের পরিণতিতে পৌছে দেয়ার চুড়ান্ত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তনের কারণে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় নি। জন কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত এ ব্যাংকটি জনগণের প্রচেষ্টা আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর দ্বার প্রান্তে পৌঁছাতে সক্ষম ভয়েছে। ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখায় খোঁজ খবর নিয়ে এমটিই জানা গেছে।
দেশের শিল্প বিকাশ ও অর্থনীতি শক্তিশালী করণে ইসলামি ব্যাংক পরিণত হয়েছিল একটি পরিচ্ছন্ন আদর্শিক শক্তিতে।শুধু নিজ ব্যাংকের গ্রাহকদের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতিকই ছিল না, অন্যান্য ব্যাংকগুলোরও আস্থা ও নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক ছিল এ ব্যাংক। ইসলামি ব্যাংকের গ্রাহকদের নিজ ব্যাংকে টানতে রীতিমতো অন্যান্য ব্যাংকগুলোর মধ্যেই প্রতিযোগিতা ছিল। ২০১৬ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গোয়েন্দাবাহিনীর সহযোগিতায় এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি অবৈধভাবে দখল করে নেয়। দখলের পর থেকে নজিরভাবে চলে লুটপাট।এতে ব্যাংকটির ঐতিহ্য, মানুষের আস্থা ও আর্থিক অবস্থা তলানিতে নেমে আসে।
ব্যাংকটিতে এ দুর্যোগ সৃষ্টির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন ব্যাংকটির সাবেক এমডি মাহবুব আলম ও ছুটিতে পাঠানো এমডি ও প্রধান নির্বাহী জনাব মোহাম্মদ মনিরুল মওলা। লুটপাট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সহযোগী ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গর্ভনরসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা। এস আলমের এই লুটপাটের ধরন ছিল অভাবনীয়, বহুমাতৃক ও ভয়ংকর রকমের। এই লুটপাট করার জন্য ব্যাংকিং কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি।
উল্লেখ্য, পট পরিবর্তনের পর থেকে জাতীয় সংবাদ পত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নাম সর্বস্ব ও বেনামি প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে যে-সব ঋণ বিতরণ হয়েছে তাদের আংশিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ চিত্র কোনো পত্র-পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনও প্রকাশ হয়নি। ব্যাংকের পক্ষ থেকেও লুটপাটের সুনির্দিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কোনো চিত্র এখনো প্রকাশ করা হয়নি। পূর্ব থেকে এস আলমের যে সব প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবসা চলে আসছিল সে সব প্রতিষ্ঠানের নামে লুটপাটের চিত্র আঁৎকে ওঠার মত। এই ভয়ংকর লুটপাটে প্রধান কারিগর হলেন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহী জনাব মনিরুল মওলা। কারণ এস আলমের নামে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের নামে স্পেশাল ঋণ পরিচালনা পরিষদ অনুমোদন করেনি বরং এমডি নিজে অনুমোদন দিয়েছেন। এককভাবে এমডি কর্তৃক এই ঋণ বিতরণের পরিমাণ হলো ১৯৩৪৯ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণগুলো তিনি বাই মুরাবাহা প্লেজের নামে বিতরণ করেছেন।
এখানেও উল্লেখ্য যে, বিনিয়োগের বিপরীতে পণ্য ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা সেই বিনিয়োগকে বাই মুরাবাহা প্লেজ বলে। ইসলামি ব্যাংকে এই ঋণের নিয়ম হলো, ব্যাংকের টাকায় পণ্য ক্রয় করে ব্যাংকের গোডাউনে রাখবে, যে পরিমাণ টাকা গ্রাহক দিবে সেই পরিমাণ পণ্য ব্যাংকের গোডাউন থেকে গ্রাহক নিতে পারবে। বাস্তব চিত্র হলো এস আলম ১৯৩৪৯ কোটি টাকার পণ্য ব্যাংক থেকে নিয়ে গেছে এর বিপরীতে ১ টাকাও ব্যাংকে পরিশোধ করেনি। এই উনিশ হাজার কোটি তাকার পুরো টাকাই অনাদায়ি রয়ে গেছে। এই অপকর্মের জন্য এককভাবে দায়ী এমডি মনিরুল মওলা বলে চিহ্নিত করেছে ব্যাংকের নিজস্ব অডিট ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে করা অডিট প্রতিবেদনে। নিচে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে একদিনে এ ঋণ দেয়া হয়নি বরং মনিরুল মওলা দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিমাণে পর্যায়ক্রমে দিয়েছে। কিন্তু পূর্বের টাকা আদায় না করেই পরের ঋণ মঞ্জুর করেছে এবং বিতরণ করেছেন। অর্থাৎ এস আলমের ধারাবাহিক এই লুটপাটের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন মনিরুল মওলা।
মনিরুল মওলার অপকর্মের একটি সংক্ষিপ্ত বিররন
মনিরুল মওলার অপকর্মের একটি সংক্ষিপ্ত তথ্য দেয়া হলো। এস. আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের নামে ১৫৫১ কোটি টাকা স্পেশাল ঋণ, এস আলম এডিবল ওয়েলের নামে স্পেশাল ৩২৩২ কোটি টাকা, এস আলম রিফাইন্ড সুগার, এস আলম স্টিল ও এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের নামে স্পেশাল ৩৬৮৪ কোটি টাকা, এস আলম ভেজিটেবল ওয়েলের নামে স্পেশাল ৪৩৪৫ কোটি টাকা, চেমন স্পিাতের নামে স্পেশাল ৩৩৩৭ কোটি টাকা, ইনফিনিট সিআর স্ট্রিপস্ ইন্ডাস্ট্রিজ এর নামে স্পেশাল ২২৮২ কোটি টাকা এবং গ্লোবাল ট্রেডিং-এর নামে স্পেশাল ৯৭৫ কোটি টাকা। সর্বমোট ১৯৩৪৯ কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে ১ টাকাও জামানত নেই। মনিরুল মওলা খুব ভালোভাবে জানতেন এস আলম ১টি টাকাও পরিশাধ করছে না, তারপরও একই প্রতিষ্ঠানের নামে অব্যাহতভাবে বাই মুরাবাহা প্লেজ ঋণ দিয়ে গেছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী এই ঋণ দেয়ার অথরিটি এমডি রাখেন না। Instruction Circular No. HRW 1694, 1 January 2020 অনুযায়ী এলসির ক্ষেত্রে এমডি সর্বোচ্চ ৫০ কোটি এবং বাই মুরাবাহা প্লেজের ক্ষেত্রে এমডি সর্বোচ্চ ৭-৯ কোটি টাকা মঞ্জুর করতে পারেন। সুতরাং বাই মুরাবাহা প্লেজ বিনিয়োগের প্রত্যেটির ক্ষেত্রে তিনি নিয়মের বাইরে গিয়ে অনুমোদন ও বিতরণ করেছেন। যে ক্ষমতা একমাত্র বোর্ডের রয়েছে সেই ক্ষমতা নিজে খাটিয়েছেন। নিজের পদ টিকিয়ে রেখে ফায়দা লুটের জন্য বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে একাই এত অপকর্ম করেছেন। এই ১৯৩৪৯ কোটি টাকার কোনো মঞ্জুরি পত্র খতুিনগঞ্জ শাখায় নেই। এমডি জনাব মোহাম্মদ মনিরুল মওলা করপোরেট ইনভেস্টমেন্ট উইং-১ ও আইটি ডিভিশনের সহায়তায় এই অপকর্ম করেছেন। ব্যাংকের সফটওয়্যারে প্রত্যেকটি অপকর্মের রেকর্ড এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
ইসলামি ব্যাংকে এ রকম অনেক নজির রয়েছে যে, বাই মুরাবাহার পণ্যের মাত্র ১ লক্ষ টাকা মূল্যের পণ্য শর্টফলের জন্য এর সাথে জড়িতদের চাকরি চলে গেছে কিন্তু ১৯৩৪৯ কোটি টাকা মুরাবাহা পণ্য শর্টফলের জন্য এখন পর্যন্ত কারো চাকরি যায়নি। বরং মনিরুল মাওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হলে এর সাথে জড়িত অনেকে এখনো বহাল তবিয়তে যে। যে এমডি ১৯৩৪৯ কোটি লুটের প্রধান কারিগর ছিলেন তিনি দেশে এত বড় পরিবর্তনের পর তাকে এতদিন টিকিয়ে রাখা হয়েছে বা কার স্বার্থে তাকে টিকিয়ে রাখা হয়েছিলো এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।
এছাড়া ৫ আগস্টের পর এস. আলমের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে ব্যাংকটিকে পুনর্গঠন করতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনে করে দেয়। পট পরিবর্তনের পর অন্যান্য ব্যাংক বিতর্কিত এস. আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করলেও ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এ পর্যন্ত একটি মামলা করেনি বলে জানা যায়।
এ ছাড়া, দেশ হাসিনার কবল থেকে মুক্তির পর প্রথম দিকে অনেকেই মনে করেছিলেন মনিরুল মাওলাকে রাখা হলে তিনি ইসলামি ব্যাংকের ঐতিহ্য ও জন আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে মনোযোগী হবেন। এস. আলমের লুটের টাকা আদায়ে পদক্ষেপ নিবেন। বাস্তবে এই ধারণা শতভাগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
মোহাম্মদ মনিরুল মওলা জুলাই বিপ্লবের পর এস আলম থেকে ১টি টাকাও আদায় করতে পদক্ষেপ নেনই নি অধিকন্তু তিনি প্রতি পদে পদে বাধা হয়ে ছিলেন, যাতে এস আলমের কাছ থেকে টাকা ব্যাংক আদায় করতে না পারে।
একটি সূত্রে জানা গেছে তিনি প্রতিনিয়ত এস আলমের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং ব্যাংকে না দিয়ে কীভাবে পার পাওয়া যাবে এ ধরনের অসৎ পরামর্শ দিচ্ছেন। যেহেতু তিনি নিজে এই অপকর্মের প্রধান সহযোগী এ কারণে এমন করাটা আশ্চর্যের কোনো বিষয় না বলেও অনেকে মনে করেন। জুলাই বিপ্লবের পর ৪ মাস ইসলামি ব্যাংক মারাত্মক ডিপোজিট সংকটে ছিল, এ সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে এমডিকে নির্লিপ্ত দেখা গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ।
অন্যান্য ব্যাংক এস আলমের বিধি বহির্ভূত নিয়োগ দেয়া দোসরদের চাকুরিচ্যুত করলেও মনিরুল মাওলার প্রত্যক্ষ মদদের কারণে ইসলামি ব্যাংক এখনো অবৈধ নিয়োগকৃত দোসরদের চাকুরিচ্যুত করতে পারেনি। কারণ এসব অবৈধ নিয়োগ তার হাতে হয়েছিল। ১৩ হাজার কর্মকর্তা অবৈধভাবে নিয়োগ দিলে বার বার মিডিয়ার সামনে মিথ্যাচার করে বলেছেন, নিয়ম মেনেই সব নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। এসব অযোগ্য ও অবৈধ নিয়োগকৃত কর্মকর্তা কর্মচারীকে বৈধ করার জন্য বিভিন্ন তালবাহানা করে সময় ক্ষেপণ করছেন।
২০১৮ সালের পর থেকে ১ লক্ষ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হওয়ার পরও তিনি বারবার মিডিয়ার সামনে বলেছে, নিয়ম মেনে সব ঋণ দেয়া হয়েছে। অনেকে এ বিষয় প্রশ্ন তুলেছেন, নিয়ম মেনে যেহেতু বিনিয়োগ দেয়া হয়েছে, তা’হলে পর্যায়ক্রমে এ সকল বিনিয়োগ কেন মন্দ ঋণে পরিণত হচ্ছে? গত কয়েক মাসে এমডি মনিরুল মাওলার বিরুদ্ধে দুদকে তিনটি মামলা হওয়ার পরও সেই এমডি নিয়মিত অফিস করেছেন কীভাবে? জনমনে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে অন্যান্য সকল ব্যাংক থেকে যত লুট হয়েছে ইসলামি ব্যাংক থেকে এককভাবে তার চেয়ে বেশি লুট হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকেটির সিএসআর খাতের প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাটের প্রধান সহযোগী ছিলেন এমন অভিযোগও রয়েছে মোহাম্মদ মনিরুল মওলা বিরুদ্ধে । এছাড়া হাজীদেও ছাতার ১০ কোটি টাকা ও ব্যাংক অফিসারদের গিফটের জন্য বরাদ্দকৃত স্যুটের ১২.৫০ কোটি টাকাও ব্যাংক থেকে লুট করে এস আলমের হাতে তুলে দিয়েছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছিল, সে তদন্ত কমিটি অনেক বিলম্বে রিপোর্ট দিয়েছে, এমডি নিজে এ কাজে জড়িত থাকায় সে রিপোর্টও আলোর মুখ দেখেনি বলে জানা গেছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এস. আলমকে দেয়া সব অবৈধ বিনিয়োগের প্রধান সমন্বায়ক ছিলেন মনিরুল মাওলা । সুযোগ পেলে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ঘিরে এস. আলমকে নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হতে পারেন। তাকে আইনি কাঠামোতে দাড় করানো সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি বলে করছেন অনেকে। তারা এমনও বলেছেন, মনিরুল মাওলা বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেলে, এস. আলমের সাথে যুক্ত হয়ে ইসলামি ব্যাংক নিয়ে নতুন ধরনের ষড়যন্ত্র লিপ্ত হবেন। ব্যাংকটিকে রক্ষা করতে যত দ্রুত সম্ভব তাকে আইনের আওতায় নেয়া জরুবী বলে মনে করছেন অনেক।