Site icon দৈনিক এই বাংলা

কাজ শেষের ৩ মাসের মাথায় রাস্তায় ফাটল সরকারী টাকা অপচয়

চৌদ্দগ্রাম থেকে ফিরে এসে নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রকল্প কাজ শেষের ৩ মাসের মাথায় ফাটল দেখা দিয়েছে চৌদ্দগ্রামের শেখ মুজিব রোডে। এত মোটা অংকের সরকারী টাকা অপচয় হচ্ছে।

শেখ মুজিব রোড, চৌদ্দগ্রাম।

জানা যায়, নবগ্রাম থেকে মুন্সিরহাট এর রাস্তাটি প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আম্পান প্রকল্পের আধিনে উন্নয়ন ও প্রশস্ত করার কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি কুমিল্লা।

কাজটি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে শুরু করে ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে কাজটি সমাপ্ত করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লিবার্টি ট্রেডার্স। কাজটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলো এলজিইডির চৌদ্দগ্রাম অফিস। এ কাজে সাবেক স্হানীয় সাংসদ মুজিবুল হকের পক্ষে সার্বিক ব্যবস্হাপনার দায়ীত্ব পালন করে মুন্সিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজ আলম (তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন)।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে জানান, সাংসদ মুজিবুল হকের বিশ্বস্ত মাহফুজ আলম টেন্ডার সিডিউলে বর্ণিত স্পেসিফিকেশন ও ডিজাইন অনুযায়ী কাজ না করে যেনতেনভাবে কাজটি সমাপ্ত করে ১০০ ভাগ ভৌত অগ্রগতি দেখিয়েছেন।

তারা আরো জানান, রাস্তাটি নির্মানকালে পুরানো রাস্তায় অকেজো খোয়া ও পাথর ব্যবহার করেন। এছাড়া পাইলিং ও আরসিসির কাজসমূহ সিডিউলে বর্নিত স্পেসিফিকেশন ও ডিজাইন অনুযায়ী সম্পাদন না করে সেখানে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেন। এ কারনে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ একেবারেই নিম্নমানের হয়েছে এবং কাজ শেষ হতে না হতে অল্পদিনের মধ্যেই ফাটল দেখা দেয়।

স্হানীয়রা জানান, নিম্ম মানের এ কাজ করতে সার্বিক সহযোগীতা করেন চৌদ্দগ্রামের এলজিইডি অফিসের সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জনাব তওহীদ বিন আযম(যিনি সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদুর রহমান এর ভাই।

এ দিকে, বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য কাজের মত কমিশন নিয়ে সাবেক এমপি মুজিবুল হকের বিশ্বস্ত মুন্সিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজ আলমকে কাজের দায়িত্ব দেন। কাজটি যেনতেনভাবে শেষ করে অধিকাংশ বিল নিয়া নেন মাহফুজ আলমের নিয়ন্ত্রিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ।

রাস্তার ফাটল রোধ করার জন্যে ইতোমধ্যে কয়েকবার বিটুমিন দেওয়া হয়েছে। তাতে কোন কাজ হয় নি।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রামের থানা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জানান, কাজটি যথযথভাবে সমাপ্ত করা হয়েছে। এখানে কোন দূর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয় নি।

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাদের চোখের সামনেই মাহফুজ চেয়ারম্যান কাজটি সমাপ্ত করেছেন অত্যন্ত নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে। এ বিষয়ে স্হানীয়রা বাধা দিতে গেলে ক্ষমতাধর মাহফুজ চেয়ারম্যানের রোষের শিকার হতে হয়েছে অনেককে। মাহফুজ চেয়ারম্যান এমপি মুজিবুল হকের অপরাধ ও দূর্নীতি চক্রের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। এ কারনে জুলাই বিপ্লবের পর মাহফুজ আলম এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মুন্সিরহাট ইউনিয়নের অনেকে ।

তারা আরো জানান এ কাজটি করতে গিয়ে রীতিমতো হরিলুটের কান্ড ঘটেছে। এই রাস্তা থেকে সাবেক এমপি মজিবুল হক, তৎকালীন দায়ীত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী , উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, UE, সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তওহীদ বিন আযম, কার্য সহকারী আবুল কাশেমও মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেছেন।

 

Exit mobile version