নাদিরা শিমু ::
চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় একাধিক মামলার আসামি মুহাম্মদ মামুনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী মুখোশ পড়ে হামলা চালায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের উপর। বৃহস্পতিবার রাতে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহমদের ছেলে কামাল উদ্দিনকে আক্রমণ করতে যায়। নেতৃত্বদানকারী মামুন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক নুরুল আলম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সুত্র জানায়, এলাকাবাসী হামলায় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে ১২ থেকে ১৫ জন সাধারণ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের শরীরের গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার ডা. রিভু রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘ আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আহত বাকি তিনজনের শরীরে গুলির চিহ্ন নেই। তবে জখমের দাগ রয়েছে।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে বাড়ির লোকজন আহত হয়েছেন, সেটি নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহমদের পুরোনো বাড়ি নামে পরিচিত। তাঁর ছেলে কামাল উদ্দিনের ওপর হামলা করার জন্যই মুখোশধারীরা গিয়েছিলেন। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে, হামলাকারীরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। থানা-পুলিশ বলছে, মুহাম্মদ মামুনের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। তিনি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। মামুন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক নুরুল আলম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনায় দলীয় কারও সম্পৃক্ততা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে। হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি মুহাম্মদ মামুনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী গতকাল রাতে তাঁর প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহমদের ছেলে কামাল উদ্দিনকে আক্রমণ করতে যায়। এলাকাবাসী তাতে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে ১২ থেকে ১৫ জন সাধারণ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়।’
ওসি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা এর আগেও কামাল উদ্দিনের বাড়িতে একাধিকবার গুলি ছুড়ে তাঁর ওপর হামলা করেছিল। ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এখনো মামলা হয়নি। তবে আজ রাতের মধ্যে মামলা করবেন বলে জানা গেছে।