Site icon দৈনিক এই বাংলা

পুলিশের মুখোমুখি ব্রাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :::

কোটা সংস্কার কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলনরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ডাকা ‘কমপ্লিট সাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় রাজধানী ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রাক ইউনিভার্সিটি ও ইস্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে বাড্ডা এলাকায় ব্রাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়।

উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের সামাল দিতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়ে মারে। এ সময় ব্যাক ইউনিভার্সিটি ছাত্রছাত্রীদের  সাথে যোগ দিতে দেখা যায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদেরও । এ সময় পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। পরে আরও শিক্ষার্থী যোগ দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে রাখে । বর্তমানে মেরুল বাড্ডা এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সব যানবাহনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ব্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওসিফ আমান জানান, সারাদেশে শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে মাঠে রয়েছে।  পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি সফল করতে আমার ক্যাম্পাস থেকে বের হবার সাথে সাথে পুলিশ বাঁধা দেয়। ছাত্রছাত্রীদের দিকে রাবার বুলেট, কাঁদানো গ্যাস ছুঁড়তে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকশ শিক্ষার্থী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় মেরুল বাড্ডা এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সব যানবাহনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে রাস্তায় শত শত যানবাহন আটকে আছে। আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন।

ব্র্যাকের শিক্ষার্থীদের অবরোধের এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় প্রথমবার শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে তারাও পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন, এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ফাটায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভেতরে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-র‍্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আজ কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) পালন করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচি চলাকালে শুধু হাসপাতাল, গণমাধ্যমসহ অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ মোট ৮ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। মঙ্গলবার সেই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

Exit mobile version