তানভীর আহমেদ, কক্সবাজার থেকে ফিরে
প্রতিটি পর্যটকের চাওয়া তার পছন্দনীয় পর্যটন কেন্দ্র টি হোক সৌন্দর্যমন্ডিত , পরিচ্ছন্ন, ঝঞ্ঝাট মুক্ত , নিরাপদ ও নিরাপত্তায় পরিপূর্ণ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিকট অন্যতম কাঙ্খিত পর্যটন কেন্দ্র । আর এই কাঙ্খিত পর্যটন কেন্দ্রে আগত দেশে-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পর্যটনের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সুযোগ- সুবিধা নিশ্চিতকল্পে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের এডিআইজি আপেল মাহমুদ।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আপেল মাহমুদ কক্সবাজারে আগত দেশে-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে নিয়েছেন নানা বাস্তবমুখী পদক্ষেপ এবং এইসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সশরীরে উপস্থিত থেকে কাজ করছেন মধ্যরাত অবধি। ইতিমধ্যে তার বিভিন্ন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তার সার্থক বাস্তবায়নের ফলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বর্তমানে পর্যটক বান্ধব সৈকতে পরিণত হয়েছে। ম্যাসাজ বয়, হিজড়া, ফটোগ্রাফার ও বখাটেদের কর্তক সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের হয়রানি বর্তমানে প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে । কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বর্তমানে ম্যাসাজ বয়, হিজরা, ফটোগ্রাফার ও বখাটে মুক্ত ।
সরজমিনে পরিদর্শনে তার সত্যতাও মেলে ।
ঢাকা থেকে আগত একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত পর্যটক আরিফ হোসেন বলেন, ” প্রতি বছর আমি পরিবার নিয়ে এখানে আসি । পূর্বে সমুদ্র সৈকতে হিজড়া, ম্যাসাজ বয়, ফটোগ্রাফার ও বখাটেদের উৎপাত ছিল রীতিমতো দৃষ্টিকটু । এবার তার ছিটে ফোঁটাও দেখা মিলছে না । পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা টুরিস্ট পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে বলে প্রতিীয়মান হচ্ছে । এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে ” ।
কুমিল্লা থেকে আগত একটি টুরিস্ট গ্রুপের প্রধান পঞ্চাশোর্ধ বয়সী রাজিব সিনহা বলেন, ” বছরে দুইবার টুরিস্টদের নিয়ে এখানে আসা হয় । পূর্বে সমুদ্র সৈকত এবং তৎ সংলগ্ন এলাকায় যে সমস্ত সমস্যা পর্যটকদের সম্মুখীন হতে হতো তা বর্তমানে নেই বললেই চলে । বিশেষ করে দিনে এবং রাত্রে টুরিস্ট পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা চোখে পরার মত। পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এখানকার এডিআইজি আপেল মাহমুদ নিজেই উপস্থিত থেকে সবকিছু তদারকি করেন ” ।
পর্যটকদের কথার সত্যতা মিলে মধ্যরাতে এডিআইজি আপেল মাহমুদের তৎপরতা এই প্রতিবেদক নিজ চোখে অবলোকন করে । ঘড়ির কাটায় রাত সাড়ে বারোটায় ফোর্স নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত চষে বেড়াচ্ছেন আপেল মাহমুদ। কোন পর্যটক উশৃঙ্খল আচরণ করলে তাকে শান্তভাবে পর্যটন এলাকায় তার আচরণগত সীমাবদ্ধতা বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিনয়ের সাথে। কোন হিজড়া কিংবা ম্যাসাজ বয় দেখলেই নিচ্ছেন কঠোর পদক্ষেপ । সমুদ্র সৈকত আসা প্রায় প্রতিটি পর্যটকদের সাথে কথা বলে জেনে নিচ্ছেন তাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা কিংবা সমুদ্র সৈকতকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য পর্যটকদের কোন নিজস্ব মতামত আছে কিনা, সৈকতে আগত নবদম্পতিদের জানাচ্ছেন ফুলেল শুভেচ্ছা ।
পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিতকল্প গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে
এডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ” কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকল্প আমার গৃহীত পদক্ষেপ বর্তমানে বাস্তবিক রূপ লাভ করেছে। কক্সবাজারবাসী ও টুরিস্ট পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমুদ্র সৈকত বর্তমানে হিজড়া, ম্যাসাজ বয়, ফটোগ্রাফার ও বখাটে মুক্ত। আমি ১২০ জন হিজড়া কে পুনর্বাসন করেছি , যেন তারা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের বিরক্ত না করেন । হোটেল ও বাস মালিকদের সাথে বৈঠক করে হোটেল ও বাস ভাড়া সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং তাদের বলেছি কোন পর্যটক যেন হয়রানির শিকার হতে না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে। সমুদ্র সৈকত ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সমাজ বহির্ভূত যেকোনো কার্যকলাপ রোধের জন্য সাদা পোশাকে বিশেষ টীম কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত এর অধিকারী কক্সবাজার কে সত্যিকারের পর্যটন বান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমার উপর রাষ্ট্র কর্তৃ ক অর্পিত দায়িত্ব আমি নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাব যে কোন মূল্যেই ” ।
কক্সবাজার এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের প্রত্যাশা, এডিআইজি আপেল মাহমুদ ও টুরিস্ট পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একটি সত্যিকারের পর্যটন বান্ধব নগরী হিসেবে কক্সবাজার পরিচিত হবে সবার কাছে ।